আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৪/০১/২০২৫ ০৫:৩৭পি এম
কুষ্টিয়ায় ইউপি কার্যালয়ে নাটকীয় পরিস্থিতি: নারীদের মিছিল, তালা ভাঙা ও চেয়ারম্যানকে বসানো
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদে এক নাটকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আট দিন ধরে বন্ধ থাকা ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের তালা ভেঙে চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে তার নির্ধারিত চেয়ারে বসিয়েছেন একদল ক্ষুব্ধ নারী। জনদুর্ভোগে অতিষ্ঠ হয়ে তারা এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন বলে জানান।
গত সোমবার দুপুরে সংঘটিত এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ও তীব্র আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
কার্যালয়ে তালা ও বিতর্কের সূত্রপাত
৪ জানুয়ারি রাতে ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ঘোষিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনের অভিযোগ তুলে যদুবয়রা ইউনিয়ন ছাত্রদলের কর্মীরা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন। পরদিন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা পরিষদ ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে পরিষদ থেকে গ্রাম পুলিশ ও সচিবকে বের করে দেন।
৬ জানুয়ারি প্রশাসনের মধ্যস্থতায় প্রধান ফটকের তালা খোলা হলেও চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের তালা সোমবার পর্যন্ত ঝুলছিল।
চেয়ারম্যানকে পুনর্বহাল
তালা ভাঙার নেতৃত্বে থাকা নারীরা জানান, চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জনসাধারণের সেবার জন্য বারান্দায় বা পথেঘাটে বসে কাজ করছিলেন। এতে ভোগান্তি চরমে ওঠায় তারা হাতুড়ি দিয়ে তালা ভেঙে চেয়ারম্যানকে বাড়ি থেকে ডেকে আনার সিদ্ধান্ত নেন।
স্থানীয়দের দাবি, তালা ভাঙা নারীদের অনেকেই ভাতাভোগী ও চেয়ারম্যানের সমর্থক। অন্যদিকে, বিএনপি সমর্থকরা অভিযোগ করছেন, প্রশাসনের আশ্বাস উপেক্ষা করে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
প্রশাসনের বক্তব্য
কুমারখালী থানার ওসি সোলায়মান শেখ জানান, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, সরকারি ভবনে তালা লাগানো ও ভাঙা—দুটোই অবৈধ। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং তাদের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন।
চেয়ারম্যানের প্রতিক্রিয়া
চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, এটি একটি ষড়যন্ত্র। ছাত্রলীগের নামে ঘটানো একটি ঘটনার ভিত্তিতে তার কার্যালয়ে তালা লাগানো হয়। তবে এখন পরিষদের সেবামূলক কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
উপসংহার
যদুবয়রা ইউনিয়নের এই ঘটনা স্থানীয় রাজনীতির উত্তপ্ত অবস্থার একটি উদাহরণ। প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ ছাড়া এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।