শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
Verified আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৭/১২/২০২৪ ০৭:৩৮পি এম

কারাগার থেকে ব্যারিস্টার সুমনের চিঠি

কারাগার থেকে ব্যারিস্টার সুমনের চিঠি
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন—হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, জনপ্রিয় সামাজিক কর্মী এবং সোশ্যাল মিডিয়া সেলিব্রিটি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অগ্রভাগে থেকে আলোচিত এই নেতা বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। সম্প্রতি তিনি দুটি আবেগঘন চিঠি লিখেছেন—একটি মাকে উদ্দেশ্য করে এবং অন্যটি ভাই-বোনদের উদ্দেশ্যে।

ব্যারিস্টার সুমনের কারাগার থেকে লেখা চিঠি দুটি তার মানবিক দিক, আত্মবিশ্বাস এবং পরিবারের প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। মাকে উদ্দেশ্য করা চিঠিতে তিনি তার জন্ম থেকে মায়ের কষ্টের কথা স্মরণ করেছেন এবং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখার কথা বলেছেন। অন্যদিকে ভাই-বোনদের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে তিনি কোনো চোর বা দুর্নীতিবাজ নন, বরং একজন "রাজবন্দি" হিসেবে লড়াই করছেন।

তিনি উল্লেখ করেন, তার জন্য পরিবারের সহযোগিতাই প্রকৃত সম্পদ এবং পরবর্তী প্রজন্মের প্রতি ভাই-বোনদের দায়িত্বের ওপর আস্থা প্রকাশ করেছেন। এই চিঠিগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর মানুষ আবেগে আপ্লুত হয়েছে।

চিঠি দুটি লিখিত হয়েছে ১২ ডিসেম্বর ও ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে। এটি ব্যারিস্টার সুমনের পরিবারে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

কাশিমপুর কারাগার থেকে চিঠি দুটি পাঠানো হয়েছে। পরে ব্যারিস্টার সুমনের লন্ডনপ্রবাসী ভাই সৈয়দ সোহাগ তার ফেসবুক পেজে এই চিঠিগুলো শেয়ার করেন।

চিঠি লেখার মূল উদ্দেশ্য ছিল পরিবারকে আশ্বস্ত করা এবং তার সংগ্রামের প্রকৃত চেহারা তুলে ধরা। চিঠির প্রতিটি শব্দে আত্মবিশ্বাস, লড়াইয়ের শক্তি এবং পরিবারের প্রতি ভালোবাসা ফুটে ওঠে। নিজের দুঃখ-কষ্ট আড়াল করে তিনি পরিবারের সবার মানসিক শক্তি ধরে রাখতে চেয়েছেন।

ব্যারিস্টার সুমনের বক্তব্য, তিনি কোনো অপরাধে নয় বরং একটি আদর্শিক সংগ্রামের কারণে কারাবন্দি। এই চিঠির মাধ্যমে তিনি তার নৈতিক অবস্থান এবং আত্মবিশ্বাস আরও একবার প্রমাণ করেছেন।

ব্যারিস্টার সুমনের চিঠি দুটি শুধু তার ব্যক্তিগত অনুভূতি নয়, বরং একটি সময়ের দলিল। একটি চিঠিতে মায়ের প্রতি ত্যাগের স্বীকৃতি ও সন্তানের ভালোবাসা যেমন স্পষ্ট, অন্য চিঠিতে ভাই-বোনদের উদ্দেশ্যে তার আত্মবিশ্বাস, সংগ্রামের নীতি এবং ঐক্যের বার্তা আরও শক্তিশালী হয়ে ধরা দেয়।

এমন চিঠির গুরুত্ব কেন বিশেষ? কারণ এটি সমাজে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রতিটি মানুষের পক্ষে একটি বার্তা দেয় যে সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো মানুষ কখনো একা নয়। পরিবারের ভালোবাসা ও সমর্থনই তাদের আসল শক্তি।

ব্যারিস্টার সুমন তার চিঠিতে বলেছেন, "রাজবন্দি হিসেবে জেলে আছি, কোনো চোর বা দুর্নীতির হিসেবে নই।" এটি শুধু তার ব্যক্তিগত নয়, বরং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমর্থকদের জন্য এক আশার বাণী।

পরিবার, আত্মবিশ্বাস ও ন্যায়ের প্রতি অঙ্গীকার নিয়ে তিনি কারাগারে থেকেও প্রমাণ করেছেন যে সত্যের পথে যারা লড়াই করে, তাদের কণ্ঠ কখনো রুদ্ধ হয় না। তার চিঠি লাখো তরুণকে নতুন করে অনুপ্রাণিত করবে। আশা করা যায়, আইনি প্রক্রিয়ায় তিনি শিগগিরই জনগণের মাঝে ফিরে আসবেন এবং তার অসমাপ্ত লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

সৈয়দ সোহাগের ভাষায়, "আমার ভাই সুমন কোনো অন্যায় করেনি। তার জীবন জনগণের কল্যাণে ব্যয় হয়েছে।" এই চিঠি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, একজন সত্যিকারের বিপ্লবী কেবল নিজের জন্য নয়, বরং সমাজের জন্য বেঁচে থাকেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ