আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২১/১২/২০২৪ ১২:৫১পি এম
চট্টগ্রামে যুবদলের নেতৃত্বে আসছেন নতুন মুখ, তবে পুরনোদের সম্ভাবনা বজায়
চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবদলের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছে। যুবদলের কমিটির নতুন নেতা নির্বাচনে রীতিমতো দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে নেতাদের মধ্যে। একদিকে, স্বচ্ছ ইমেজ ও ত্যাগী নেতারা সংগঠনের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী, অন্যদিকে বিতর্কিত নেতারাও পিছিয়ে নেই। নতুন নেতৃত্বের বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে চট্টগ্রাম অঞ্চলের শীর্ষ নেতাদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দীর্ঘ আলোচনা হয়। জানা গেছে, আজ শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপে যুক্ত হয়ে গঠনতান্ত্রিক এবং সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
তবে, এই তিনটি ইউনিটে নতুন নেতৃত্ব আসবে কি না, বা পুরোনোদের ওপরই আস্থা রাখবে কেন্দ্র, এ নিয়ে চলছে নানা শঙ্কা। তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন, যারা দলের জন্য ত্যাগ করেছেন এবং নির্যাতিত হয়েছেন, তাদেরকেই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর এবং দক্ষিণ জেলা যুবদল সবসময়ই চট্টগ্রামে বিএনপির সহযোগী সংগঠন হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এবং সরকারের পতনের আন্দোলনে যুবদল ছিল সম্মুখসারিতে। দলীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি, এককভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে নানামুখী ভূমিকা রেখেছেন চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা।
বর্তমানে, যুবদলের নতুন কমিটি গঠনের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। পদপ্রত্যাশীরা তাদের অবস্থান শক্ত করার জন্য ঢাকায় গিয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে তদবির করছেন। একইসঙ্গে, স্থানীয় নেতাদের কাছেও তদবির করতে দেখা যাচ্ছে। সাবেক ছাত্রনেতারা, বিশেষত, যুবদলে নেতৃত্ব নিতে আগ্রহী।
নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং তিনি দলের সিদ্ধান্তে পূর্ণ আস্থা রাখেন। তিনি আরও বলেন, “যতদিন দায়িত্বে ছিলাম, সংগঠনকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতেও যদি সুযোগ পাই, দলকে আরও সুসংগঠিত করার চেষ্টা করব।”
এদিকে, গুঞ্জন রয়েছে যে, নগর যুবদলের নতুন কমিটিতে মোশাররফ হোসেন দীপ্তি সভাপতি পদে ফিরতে পারেন, এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শাহেদ আকবরের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে, যদি দীপ্তি সভাপতি না হন, তাহলে ইকবাল হোসেন, শাহেদ আকবর, গাজী সিরাজ উল্লাহসহ অন্তত পাঁচজন নেতা এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
দলের তৃণমূল নেতা ইকবাল হোসেন বলেন, “আমি দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি এবং মনে করি এবার ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে, নয়তো কোনো সুযোগ সন্ধানী বা অনুপ্রবেশকারীকে স্থান দেওয়া হবে না।”
এদিকে, কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল বলেছেন, “যারা আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন এবং সংগঠনবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত নন, তাদেরকেই নেতৃত্বে আনা হবে। সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ নেতাদেরই আবারও মূল্যায়ন করা হবে।”
২০১৮ সালের জুন মাসে, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেদিন মোশাররফ হোসেন দীপ্তি সভাপতি এবং মোহাম্মদ শাহেদ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এবারও সংগঠনের শীর্ষ পদে সেই পুরনো মুখগুলোর ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে নেতৃত্বের পরিবর্তনও সম্ভব হতে পারে।