আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২১/১২/২০২৪ ০৮:০১পি এম
আগামীর বাংলাদেশ তরুণদের হাতে তুলে দেবো: ডা. শফিকুর রহমানের চমকপ্রদ ঘোষণায় নতুন পথচলার অঙ্গীকার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামী বাংলাদেশের নেতৃত্ব তরুণদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। শনিবার মৌলভীবাজার জেলা শাখার আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি জানান, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে দলের আন্দোলন সংগ্রামের পর, অবশেষে তরুণদের সাহসে একটি নতুন দিশা দেখছে দেশ। "আমি গর্বিত যে, আমাদের সন্তানেরা সেই কাজটি করেছে যা আমরা করতে পারিনি। তাদের জন্য আজ জাতি গর্বিত। আমরা তাদের সম্মান জানাই এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি,"– মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, "ইনশাআল্লাহ, আগামীর বাংলাদেশ আমরা তাদের হাতে তুলে দেবো।" তিনি ১৫ বছরের দীর্ঘ আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, "আমরা সেই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে বারবার আন্দোলন করেছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের তরুণদের হাতেই দেশ রক্ষা হয়েছে।"
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের আমীর ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহেদ আলী, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মো. ফখরুল ইসলাম, এড. এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনটির সঞ্চালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ ইয়ামির আলী।
সম্মেলনে প্রায় ৩০০০ কর্মী ও সমর্থক অংশগ্রহণ করেন, যারা ঘন কুয়াশা ও শীত উপেক্ষা করে উপস্থিত হন। বক্তৃতা দেওয়ার সময়, ডা. শফিকুর রহমান দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বলেন, "দেশে ভোট চুরি, গণহত্যা, এবং রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকদের হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।"
তিনি আরো বলেন, "এরা দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার ওপর আঘাত হেনেছে, তাই আমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাব। জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা কখনো চাঁদাবাজি বা দখলদারিত্বে বিশ্বাসী নয়, আমরা দেশের মানুষের জন্য শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।"
ডা. শফিকুর রহমান মৌলভীবাজারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাব ও চা শিল্পের অবস্থা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "এ জেলার কৃতি সন্তান অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ছিলেন, কিন্তু তার পরও এখানে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নেই। এই অবহেলিত জেলা কি অপরাধ করেছে?"
এড. এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, "এ দেশে কোনো চক্রন্ত মাথা চারা দিয়ে উঠতে দেওয়া হবে না। আমাদের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে যাতে কোনো অপশক্তি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে না পারে।"
মুহাম্মদ সেলিম উদ্দীন আরও বলেন, "দেশের অধিকাংশ মানুষ যে মনের ভাষা বুঝতে পেরেছিল, সেই ভাষায় স্লোগান তুলেছিল—‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’ নতুন বাংলাদেশ গড়তে আমাদের পুরানো ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং মানুষের আইন দিয়ে দেশ পরিচালনা করতে হবে।"
এতে স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, জামায়াতে ইসলামী সরকারের প্রতি তাদের রাজনৈতিক অবস্থান থেকে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
সম্মেলনে বক্তারা একযোগে নতুন বাংলাদেশের সপ্ন নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন, যেখানে বৈষম্য, শোষণ এবং দুর্নীতির অবসান ঘটানো হবে।