রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২১/১২/২০২৪ ০৭:৫১পি এম

গুমের ঘটনায় ভারতের গোপন সম্পর্ক: কমিশনের বিস্ফোরক প্রতিবেদন

গুমের ঘটনায় ভারতের গোপন সম্পর্ক: কমিশনের বিস্ফোরক প্রতিবেদন
বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় ভারতের ভূমিকা সম্পর্কে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে একটি তদন্ত কমিশন। দুই দেশের বন্দি বিনিময়ের কার্যক্রম এবং আটক ব্যক্তিদের পরিণতি নিয়ে গোপন গোয়েন্দা তথ্যের আলোকে কমিশন জানিয়েছে, এই বিষয়ে ভারতের জড়িত থাকার প্রশ্নটি এখন এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাবেক বিচারপতি মাইনুল ইসলাম চৌধুরী নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশন সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘সত্য উদঘাটন’ শিরোনামে তাদের প্রতিবেদনটি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করার মাধ্যমে কমিশন জানায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর মধ্যে শক্তিশালী ইঙ্গিত রয়েছে যে, বাংলাদেশি কিছু বন্দি এখনও ভারতের জেলে আটক আছেন।

কমিশন তাদের প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করেছে যে, বাংলাদেশ সরকারকে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের কারাগারে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের খুঁজে বের করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে কমিশন স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় যে, বাংলাদেশের সীমানার বাইরে এ বিষয়টি তদন্ত করার ক্ষমতা তাদের নেই।

প্রতিবেদনে দুটি গুমের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে, যা ভারতীয় কারাগারের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রথম ঘটনা হলো, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে অপহৃত হয়ে ভারতীয় কারাগারে যাওয়ার ঘটনা, যা সুখরঞ্জন বালির সঙ্গে ঘটেছিল। দ্বিতীয় ঘটনা, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে, যিনি ২০১৫ সালে বাংলাদেশে লুকিয়ে থাকাকালীন সময়েও ভারতীয় কারাগারে আটকে ছিলেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ এর অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, তাকে একটি পরিত্যক্ত সেলে আটক রাখা হয়েছিল, যা একটি অস্বাস্থ্যকর টয়লেট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। সালাহউদ্দিন তার উপর চরম নির্যাতনের কথা উল্লেখ করেন এবং জানান, তাকে দেওয়া কম্বলটির উপর 'টিএফআই' অক্ষরগুলো ছিল, যা 'টাস্ক ফোর্স ফর ইন্টারোগেশন' (টিআইএফ) এর ইঙ্গিত বহন করছিল।

হুম্মাম কাদের চৌধুরী আরও জানিয়ে দেন, সালাহউদ্দিনের সঙ্গে থাকা বন্দীদের মধ্যে ভারতীয় জেলখানায় হিন্দি ভাষায় কথাবার্তা চলছিল, যেখানে তাকে কখন ধরা হয়েছে, কী তথ্য দিয়েছেন, এসব প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হচ্ছিল।

কমিশন তাদের প্রতিবেদন থেকে আরও জানিয়েছে যে, এসব ঘটনাই বাংলাদেশ-ভারত বন্দি বিনিময়ের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যপ্রণালীর প্রকাশ ঘটায়, যা জনগণের সামনে আরও স্বচ্ছভাবে আসা উচিত।

এভাবে ভারতীয় কারাগারে বন্দি থাকা বাংলাদেশিদের গুমের সাথে সম্পর্কিত এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের আইনপ্রণয়ন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য এক গুরুতর সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা দিয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ