আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২১/১২/২০২৪ ১২:৩৯পি এম
সবজির দাম কমলেও বেড়েছে চাল ও মুরগির দাম—ভোক্তাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ
দেশজুড়ে পণ্যের দাম নিয়ে ক্রমাগত অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে, আর এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে কিছু পণ্যের দাম কমে গেছে, আবার কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। শীতকালীন সবজির দাম কমছে, তবে চাল ও মুরগির দাম বেড়েই চলেছে, এবং সয়াবিন তেলের সরবরাহে এখনও সমস্যা রয়েছে। এই বাজার পরিস্থিতি ক্রেতাদের জন্য অস্বস্তি তৈরি করছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে একাধিক ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে এখন আমনের মৌসুম চলছে, ফলে নতুন ধানের চাল সরবরাহ বাড়ছে। তবে পাইকারি পর্যায়ে চালের দাম বাড়ছে, যা খুচরা পর্যায়েও প্রতিফলিত হচ্ছে। মিরপুর ৬নং সেকশনের বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির চাল ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে চালের দাম বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর ফলে খুচরা বাজারে চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বিশেষ করে মোটা চালের দাম ৬০ থেকে ৬৪ টাকায় পৌঁছেছে।
চালকল মালিকরা জানিয়েছেন, ধানের দাম বাড়ার কারণে তারা চালের দাম বৃদ্ধি করেছেন। বর্তমানে প্রতি মণ ধান ১,৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যার কারণে মিনিকেট চাল ৭২-৭৫ টাকা এবং নাজিরশাইল চাল ৮০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, কয়েক সপ্তাহ স্থিতিশীল থাকার পর ব্রয়লার মুরগির দাম হঠাৎ বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। পাইকারি বাজার কাপ্তানবাজারে মুরগির সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে, তবে সোনালি জাতের মুরগি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে—প্রতি কেজি ৩২০ টাকা এবং কক প্রতি কেজি ৩৫০ টাকায়।
এছাড়া, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর পরও বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। সরকার সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়ানোর পরও বেশিরভাগ বাজারে তেল পাওয়া যাচ্ছে না, এবং যে কিছু দোকানে পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে দাম ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে রাখা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা খোলা সয়াবিন তেলের দামও ইচ্ছামতো বাড়াচ্ছেন, এবং কিছু ব্যবসায়ী তা ২০০ টাকা কেজিতেও বিক্রি করছেন।
তবে বাজারে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনও হয়েছে। পেঁয়াজ ও আলুর দাম কমেছে। দেশি পেঁয়াজের দাম ১৪০-১৫০ টাকা থেকে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমে এসেছে, এবং নতুন আলুর দাম ১২০ টাকা থেকে কমে ৭০ টাকায় পৌঁছেছে। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে, ফলে সব ধরনের সবজির দাম কমে ৪০-৫০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে। ডিমের দামও স্থিতিশীল রয়েছে, প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১৪৫-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ধরনের বাজার পরিস্থিতি ক্রেতাদের জন্য একদিকে যেমন স্বস্তি এনে দিচ্ছে, তেমনি আবার চাল ও মুরগির বাড়তি দাম নিয়ে তাদের কাছে চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করছে।