আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২২/১২/২০২৪ ১০:৪৯এ এম
বিএনপির রাজপথে ফেরার ঘোষণা: নির্বাচনি প্রস্তুতিতে চমকপ্রদ পরিকল্পনা
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলটির সমস্ত কার্যক্রম এখন নির্বাচনের দিকে কেন্দ্রীভূত। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা নিয়ে আশ্বস্ত না হয়ে, বিএনপি স্পষ্ট রোডম্যাপের দাবি জানিয়েছে। এ দাবি আদায়ে দলটি আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে সভা-সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে।
সুস্পষ্ট রোডম্যাপের দাবি
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করা পর্যন্ত দলটি আন্দোলন চালিয়ে যাবে। জানুয়ারির মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নিলে, ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে সভা-সমাবেশের মাধ্যমে চাপ বাড়াবে দলটি। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত নির্বাচিত সরকার গঠন জরুরি।
এই লক্ষ্যে সমমনা দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি। দলটি দাবি করছে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার জন্য সরকারকে সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনমুখী হতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে কোনো সুস্পষ্ট রোডম্যাপ নেই। আমরা আশা করি, তিনি শিগগিরই সংস্কারের সময় ও নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা দেবেন।”
নির্বাচনি প্রস্তুতিতে জোর
দীর্ঘ দেড় যুগ ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এবার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আসনভিত্তিক প্রার্থী তালিকার খসড়া করা হয়েছে। শরিক দলগুলোর জন্য কিছু আসন ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের নেতা-কর্মীদের সক্রিয় করতে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ভার্চুয়াল মতবিনিময়ের মাধ্যমে তৎপর রয়েছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের খুঁজে বের করে শতাধিক আসনে তরুণ নেতাদের প্রাধান্য দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে তরুণ প্রার্থীদের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের মানুষের প্রধান চাওয়া হলো একটি সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচন। জনগণ ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে নির্বাচনের জন্য সবসময় প্রস্তুত।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বিএনপি মনে করছে, সরকার যদি সময়মতো নির্বাচনমুখী না হয়, তবে দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। তাই দলটি নির্বাচনমুখী সংস্কারকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বলে মনে করে।
বিএনপি মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সক্রিয় করতে নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। সারাদেশে সভা-সমাবেশের মাধ্যমে দলটির দাবি আরও জোরালোভাবে তুলে ধরা হবে।
উপসংহার:
রাজনীতির মাঠে আবারও উত্তাপ ছড়ানোর পরিকল্পনা করছে বিএনপি। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের দাবিতে তাদের এই আন্দোলন কতটা কার্যকর হবে, তা দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী।