আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২০/০২/২০২৫ ০৫:০১পি এম
ধ্বংসের মুখোশ ফাঁস: গুমের শিকার ব্যক্তির স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক র্যাব কর্মকর্তা আলেপ
বাংলাদেশের আইন ও মানবাধিকারের ইতিহাসে আরেকটি নৃশংস অধ্যায় উন্মোচিত হলো! সাবেক র্যাব কর্মকর্তা ও এএসপি আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে গুম করা ব্যক্তির স্ত্রীকে ধর্ষণের তথ্য ও প্রমাণ উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তে। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এ চাঞ্চল্যকর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
🔴 বর্বরতার সীমা লঙ্ঘন:
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অসংখ্য গুম, খুন ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, "এক ব্যক্তিকে গুম করে রাখার সময়, রমজান মাসে রোজা ভাঙিয়ে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন আলেপ উদ্দিন। আমাদের হাতে এ সংক্রান্ত প্রমাণ এসেছে।"
তিনি আরও জানান, আলেপ উদ্দিন বহু মানুষকে অপহরণ করে দীর্ঘদিন আটকে রেখে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালিয়েছেন। ভিক্টিমদের চোখ বেঁধে, ইলেকট্রিক শক দিয়ে এবং উল্টো করে ঝুলিয়ে বর্বরতা চালানো হতো। এমন ঘটনা দেশে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
⚡ ফেসবুক পোস্টে ভয়াবহ তথ্য ফাঁস:
আলজাজিরার সাংবাদিক মউদুদ সুজনের ফেসবুক পোস্টে উঠে আসে ভয়াবহ চিত্র। গুম হওয়া ব্যক্তির বক্তব্যে জানা যায়, পবিত্র শবেকদরের রাতে রোজা ভাঙিয়ে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। এর আগেও তিনবার তাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়। শেষবার ধর্ষণের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়া স্ত্রী মৃত্যুবরণ করেন।
সেই পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, আলেপ উদ্দিনের মতো ব্যক্তি বন্দিদের পরিবারের নারীদের নিয়েও জঘন্য মানসিকতা পোষণ করতেন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী স্বামী যখন আলেপকে ফোনে অনুরোধ করে, তখন তিনি উত্তর দেন, "বন্দিদের স্ত্রীদের এভাবে ট্রিট করাই আমাদের অলিখিত নিয়ম।"
প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া:
ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। আলজাজিরার আরেক সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের জানান, ৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী সময়ে আলেপ উদ্দিন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে বদলি হন। পরে ২০ অক্টোবর ২০২৪ তার একটি পোস্টের পর প্রশাসনের টনক নড়ে। আলেপকে বরিশাল পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয় এবং সেখান থেকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সায়ের আরও বলেন, "এ ধরনের খুনি ও ধর্ষকরা এখনো বিভিন্ন বাহিনীতে বহাল রয়েছে। এদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।"
ন্যায়বিচারের দাবি:
এই ঘটনায় সারা দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মানবাধিকার কর্মী ও সাধারণ মানুষ দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #JusticeForVictims ট্রেন্ড করছে, যেখানে হাজারো মানুষ ভুক্তভোগীদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই অন্ধকার দিক উন্মোচিত হওয়ার পর জনগণের মধ্যে আতঙ্ক এবং ক্ষোভ উভয়ই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে সকলের একটাই দাবি—এই নৃশংসতার বিচার হোক এবং ভবিষ্যতে যেন আর কোনো পরিবার এমন ভয়াবহতার শিকার না হয়।
আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না!
এ ধরনের জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণই পারে একটি সুষ্ঠু ও মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে।
আপনি কি মনে করেন, অভিযুক্ত আলেপ উদ্দিনের জন্য কি সর্বোচ্চ শাস্তি প্রযোজ্য?
কমেন্টে আপনার মতামত দিন