আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২১/১২/২০২৪ ১০:২৭এ এম
তৃণমূলের দাবি, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে ত্যাগীদের নেতৃত্ব: চট্টগ্রামে যুবদলের নেতৃত্ব নিয়ে গুঞ্জন তুঙ্গে
যুবদলের নতুন নেতৃত্ব ঘিরে চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক এলাকায় তীব্র আলোচনা ও জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবদলের নেতৃত্বে কে আসবেন, তা নিয়ে পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ এবং শীর্ষ নেতাদের কাছে তদবির চলছে। স্বচ্ছ ইমেজের নেতাদের পাশাপাশি বিতর্কিতরাও নেতৃত্ব পেতে মরিয়া।
নেতৃত্ব তৈরিতে কেন্দ্রীয় বৈঠক
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যুবদলের নতুন নেতৃত্ব তৈরির বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে চট্টগ্রামের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। আজ শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপিতে যুক্ত হয়ে গঠনতান্ত্রিক ও সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।
নতুন না পুরোনো—নেতৃত্ব নিয়ে ধোঁয়াশা
চট্টগ্রামের তিনটি ইউনিটে নতুন নেতৃত্ব আসবে নাকি পুরোনোদের ওপর ভরসা রাখা হবে, তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। তৃণমূল কর্মীরা ত্যাগী ও নির্যাতিতদের নেতৃত্বে দেখতে চায়। আন্দোলন-সংগ্রামে যারা মাঠে ছিলেন, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ
নতুন কমিটিকে ঘিরে পদপ্রত্যাশীদের তদবির এখন তুঙ্গে। ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধরনা দেওয়া থেকে শুরু করে স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যেও নেতৃত্বের জন্য লড়াই চলছে।
নেতাদের বক্তব্য
নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি বলেন,
"কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তা আমরা মেনে নেব। যতদিন দায়িত্বে ছিলাম, সংগঠনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতেও সুযোগ পেলে এ কাজ চালিয়ে যাব।"
দলীয় সূত্র বলছে, মোশাররফ হোসেন দীপ্তি আবারও সভাপতি হতে পারেন। তবে বিকল্প হিসেবে আলোচিত কয়েকজনের নামও উঠে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছেন যুবদল নেতা ইকবাল হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাহেদ আকবর এবং গাজী সিরাজ উল্লাহ।
ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নের দাবি
সভাপতি পদপ্রত্যাশী ইকবাল হোসেন বলেন,
"পারিবারিক জীবনকে উপেক্ষা করে দলকে সময় দিয়েছি। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দলের প্রতি আস্থা হারাইনি। আশা করছি, এবার কমিটি হবে ত্যাগীদের নিয়ে।"
কেন্দ্রীয় নেতার বক্তব্য
যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল বলেছেন,
"যারা আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন, হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে লড়েছেন, এবং সংগঠনবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না, তাদেরই মূল্যায়ন করা হবে।"
পূর্বের কমিটি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
২০১৮ সালের ১ জুন মোশাররফ হোসেন দীপ্তিকে সভাপতি এবং মোহাম্মদ শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে একই বছরের অক্টোবর মাসে ২৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
এবারের নেতৃত্ব গঠনে তৃণমূলের প্রত্যাশা এবং কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের মেলবন্ধন কীভাবে হয়, তা নিয়ে সবার দৃষ্টি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকে। চট্টগ্রামে নেতৃত্বের এই পরিবর্তন যুবদলের ভবিষ্যৎ আন্দোলন-সংগ্রামে কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটাও দেখার বিষয়।