আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২১/১২/২০২৪ ১০:২১এ এম
ইসরাইলি বর্বর হামলায় ফিলিস্তিনে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৭ জন নিহত, মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৫ হাজার ২০৬-এ
গত ২৪ ঘণ্টায় অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলায় আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন ১৭৪ জন, যার মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কারণ উদ্ধারকারীরা এখনও অনেক ফিলিস্তিনিকে ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে উদ্ধার করতে পারেনি।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অনেকেই রাস্তায় আটকা পড়েছিলেন এবং উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, “ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে, এবং এর ফলস্বরূপ মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।”
এই ইসরাইলি হামলার ফলে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৪৫ হাজার ২০৬ জনে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে, প্রায় এক লাখ ৭ হাজার ৫১২ জন আহত হয়েছেন।
গত বছরের অক্টোবরে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের আন্তঃসীমান্ত হামলার পর ইসরাইল গাজায় ব্যাপক আক্রমণ শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। ইসরাইলের এই গণহত্যামূলক আক্রমণের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও, ইসরাইল তার নৃশংস আক্রমণ থামাতে রাজি হয়নি।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজা উপত্যকার ধ্বংসস্তূপের নিচে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে। সেসব মানুষের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না, এবং উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
এদিকে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য একটি প্রস্তাব গ্রহণ করলেও, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘের নিন্দার পরও ইসরাইল তার হামলা থামাচ্ছে না। মিশরীয় নিরাপত্তা সূত্র এবং হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আলোচনায় এখনও বড় বাধা রয়ে গেছে, তবে জিম্মি মুক্তির প্রক্রিয়ায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজায় শীতকাল শুরু হওয়ার পর মানবিক পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) সতর্ক করে দিয়েছে যে, গাজার ৯৬ শতাংশ নারী ও শিশু মৌলিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারছে না।
ইউনিসেফের মুখপাত্র রোজালিয়া বোলেন বলেন, “নভেম্বরে গাজায় গড়ে মাত্র ৬৫ ট্রাক সাহায্য প্রবেশ করেছে, যা সংঘাতের আগে প্রতিদিন ৫০০টির চেয়ে অনেক কম। এই পরিস্থিতি মানবিক বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।”
গাজার বর্তমান পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলকে ব্যাপক উদ্বেগের মধ্যে রেখেছে, তবে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা এখনও চলমান।