ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
- National
- Politics
- International
- Crime
- Law-Court
- Entertainment
- Religion and Education
- District News
- Exclusive
- Sports News
- Agriculture-Economy and Trade
- Interview
- Ramadan
- Documentary
- Health & Beauty
- Earn Money Online
- Kids
- Tech Review
- Book Review
- History
- Tour and Travel
- Stock Market
- Bangladesh
- Stock Video Footage
- Podcast
- Fact Checking
- Other
ফিল্মি স্টাইলে হামলায় আহত ৩, দোকানপাট ভেঙ্গে লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুপাট
হোমনায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ফিল্মি স্টাইলে হামলায় আহত ৩, দোকানপাট ভেঙ্গে লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুপাট
স্টাফ রিপোর্টার এর তথ্য ও ভিডিও চিত্রে বিস্তারিত
কুমিল্লার হোমনায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ফিল্মি কায়দায় প্রতিপক্ষের হামলায় একই পরিবারের ৩ ব্যক্তি গুরুত্বর আহত এবং দোকানপাট ভেঙ্গে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।
ঘটনাটি ঘটে উপজেলার আছাদপুর ইউনিয়নের ঘনিয়ারচর গ্রামের উত্তর পাড়ায়। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মহিউদ্দিন নামের এক রাজমিস্ত্রী পরিবারের উপর হামলা, ঘর লুটপাট এবং দোকানপাট ভাংচুর করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করেন। হামলায় আহতরা হলেন- রাজমিস্ত্রি মহিউদ্দিন ও তার ছোট ভাই মাইন উদ্দিন এবং তাদের বাবা খান সাব। এ বিষয়ে আহত মহিউদ্দিন বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
জানাগেছে, মহিউদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজনের সাথে একই গ্রামের প্রতিবেশি মৃত শের আলী মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (৩০), মৃত মালেক মিয়ার ছেলে ইউসুফ (৪৫), ছামির আলীর ছেলে মোমেন মিয়া (৫৫), মৃত কাদির মিয়ার ছেলে মো. রাসেল মিয়া (৩০), মোমেন মিয়ার ছেলে সোহান (২৫), সেলিম মিয়া (২০), মৃত শুক্কুর আলীর ছেলে সিরাজ মিয়া (৪০) গংদের দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার ও নানান বিষয় নিয়ে শত্রুতা ও বিরোধ চলে আসিতেছে।
সেই শত্রুতার জের ধরে ঘটনার দিন দেশিয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মহিউদ্দিনের বসত বাড়িতে ডুকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করেন তাদের এবং ঘর-বাড়ি ও দোকানপাট ভাংচুর করে লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুপাট করেন।
এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দুই দফায় হামলাকারীদের আক্রমণের শিকার হন ভুক্তভোগী মহিউদ্দিন এবং তার পরিবার। প্রথম দফায় গত ২৩ এপ্রিল ২০২৫ সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে বাদীর বসত বাড়িতে আইনবর্হিভূত ভাবে জোরপূর্বক প্রবেশ করে বাড়ি ঘরে ফিল্মি স্টাইলে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। বাড়িতে থাকা লোকজনের উপর দেশিয় অস্ত্র ধারালো দা, লাঠি, লোহার রড, হকিস্টিক ইত্যাদি দিয়ে আক্রমণ চালায় এবং পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত, ব্যাপক ভাংচুর এবং দোকান লুটপাট করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করেন। এ হামলায় মহিউদ্দিন ও তার বাবা খান সাব এবং ছোট ভাই মাইন উদ্দিন মারাত্মক রক্তাক্ত জখম ও গুরুত্বর আহত হন। এসময় হামলাকারীরা দোকান ঘর ভাংচুর এবং লুটপাট করে ৮০ হাজার টাকা, আহত মাইন উদ্দিন এর পকেটে থাকা ৭ হাজার টাকা ও বাদী মহিউদ্দিনের সাথে থাকা নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং বাড়ি ঘরের বিভিন্ন ক্ষতিসহ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধনের অভিযোগ করা হয়। তাদের "শোরচিৎকারে" আশেপাশের বাড়ির প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে এ বিষয়ে কোথাও কোনো অভিযোগ করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা চলে যায়।
এ সময় "শোরচিৎকার" শুনে স্থানীয় ও বাড়ির লোকজন এগিয়ে এসে হামলাকারীদের হাত থেকে মহিউদ্দিনকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। হামলাকারীরা যাবার সময় তাকে আবার পেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মহিউদ্দিন বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে আহত মহিউদ্দিন বলেন, মৃত শের আলীর ছেলে শুভ, মৃত মালেক মিয়ার ছেলে ইউসুফ, ছামির আলীর ছেলে মোমেন মিয়া, মৃত কাদির মিয়ার ছেলে মো. রাসেল মিয়া, মোমেন মিয়ার ছেলে সোহান, সেলিম মিয়া, মৃত শুক্কুর আলীর ছেলে সিরাজ মিয়া গংদের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের শত্রুতা ও বিরোধের বিষয়টি স্থানীয় ভাবে একাধিকবার সালিশ মিমাংসার চেষ্টা করিয়া ব্যার্থ হয় স্থানীয়রা। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা স্থানীয় সালিশ মিমাংসা তোয়াক্কা না করে আমার এবং আমার পরিবারের উপর হামলা করে। জোর পূর্বক বাড়িতে ডুুকে বসত ঘরের সামনে উঠানে বেআইনী জনতাবন্ধে দেশীয় অস্ত্র ধারালো দা, লোহার রড, লাঠিসোঠা ইত্যাদি নিয়া আমার পরিবারের সদস্যদের উপর এলোপাথারী মারধর শুরু করে। এসময় হামলাকারীরা দোকান ঘর ভাংচুর এবং লুটপাট করে নগদ অর্থসহ বাড়ি ঘরের বিভিন্ন আসবাপত্র ভাংচুর করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে। শুধু তাই নয় এই হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই ২য় দফায় আমি রাজমিস্ত্রির কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় আমাকে একা পেয়ে আবার হামলা করে। আমি প্রাণ ভয়ে দৌড়ে রাস্তার পার্শ্ববর্তী সালাম ভূঁইয়ার বাড়িতে ডুকে পড়লে তারা আমার পিছু নিয়ে সেখানে ডুকে তাদের হাতের লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাথারি পিটিয়ে আমাকে গুরুত্বর আহত করে এবং বাম ও ডান পায়ের হাড় ভেঙ্গে ফেলে। আমি এখন মৃত্যুর চেয়েও ভংয়ঙ্কর যন্ত্রণায় ভুগছি। আইন প্রশাসনের নিকট সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
আহত মাইন উদ্দিন জানান, গ্রাম্য আধিপত্য এবং দলীয় বিষয় নিয়ে আমাদের উপর এই হামলার ঘটনা ঘটে। ৫ই আগস্টে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার পালালেও তার দোসররা এখনও শক্তিশালী। আমরা বিএনপির লোক বিগত ১৭ বছরে গ্রামের আওয়ামী দোসরদের ধারা বহু হামলা মামলায় জর্জরিত। তারা এখনও চাচ্ছে সেই প্রভাব খাটাতে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করলে আমাদের উপর চলে নির্যাতন হতে হয় মারধরও হামলার শিকার। আমি বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এবং সেই সাথে প্রশাসনের নিকট এর সুষ্ঠ বিচার ও হামলার ঘটনায় জড়িতদের কঠিন শাস্তির জোর দাবী জানাই।
অভিযুক্ত শুভ মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে হামলার ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকৃত ঘটনা গ্রামের এক গৃহবধুকে মহিউদ্দিনের উত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে বিচার সালিশ বসানো নিয়ে।
গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি ও সাবেক ইউপি সদস্য এবং প্রত্যক্ষদর্শী আমির হোসেন এর কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঘটনা সত্য নিশ্চিত করে বলেন, হামলার ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্য এবং গৃহবধুকে মহিউদ্দিনের উত্যক্ত করা বা বিচার সালিশ বসানো নিয়ে এমন কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নিজেদের বাচানোর জন্য প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে মিথ্যা অপবাদ রটাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে হোমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
