বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২৪/০১/২০২৫ ১০:৫৫এ এম

সাবেক ২৪ এমপির শুল্কমুক্ত বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে, রাজস্ব আদায়ের প্রত্যাশা ১৭৫ কোটি টাকা!

সাবেক ২৪ এমপির শুল্কমুক্ত বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে, রাজস্ব আদায়ের প্রত্যাশা ১৭৫ কোটি টাকা!
সাবেক সংসদ সদস্যদের আমদানি করা বিলাসবহুল ২৪টি শুল্কমুক্ত গাড়ি এবার নিলামে তোলার ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস। দ্বাদশ সংসদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা বাতিলের পর পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কেবল একজনই শুল্ক-কর পরিশোধ করে গাড়ি খালাস করেছেন। বাকিরা সাড়া না দেওয়ায় কাস্টমস এই সিদ্ধান্ত নেয়।

নিলামে তুলতে প্রস্তুত গাড়িগুলো
নিলামে ওঠা ২৪টি গাড়ির সংরক্ষিত মূল্য (শুল্ক-করসহ) নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। প্রথম নিলামে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি সর্বোচ্চ দরদাতা গাড়িগুলো কিনতে পারবেন। প্রতিটি গাড়ির জন্য ন্যূনতম দর ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা শুল্কসহ দাঁড়াবে ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকায়।

কাস্টমসের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রথম নিলামে এসব গাড়ি থেকে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহের আশা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, আগ্রহী দরদাতারা ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরেজমিনে গাড়িগুলো পরিদর্শন করতে পারবেন। অনলাইন নিলামের প্রক্রিয়া শেষ হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি।

সাবেক এমপিদের ক্ষতি ও বিতর্ক
এই বিলাসবহুল গাড়িগুলোর জন্য সাবেক এমপিরা ৯৫ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা করে পরিশোধ করেছেন। সব মিলিয়ে তাঁদের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি টাকার মতো। তবে শুল্ক-কর পরিশোধ না করায় তাঁরা এই অর্থ আর ফেরত পাচ্ছেন না। এখন নিলামের মাধ্যমে এই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হবে।

অন্যদিকে, গাড়ি কেনা বাবদ এত টাকা হারানোর বিষয়ে একজন সাবেক এমপি বলেন, "এটি একটি দুর্ঘটনা। এখন ৮ গুণ শুল্ক-কর দিয়ে খালাস করা অসম্ভব। এ রকম বিলাসিতা আর সম্ভব নয়।"

বিলাসবহুল গাড়ির নির্মাণ প্রক্রিয়া
টয়োটা কোম্পানি সাবেক এমপিদের পছন্দ অনুযায়ী এই গাড়িগুলো নির্মাণ করেছিল। ন্যূনতম তিন থেকে চার মাস ধরে এই মডেলের গাড়ি তৈরি করা হয়। অথচ এখন তা নিলামে তোলার ফলে বিলাসবহুল এই গাড়িগুলো তাঁদের হাতছাড়া হতে যাচ্ছে।

শুল্কমুক্ত সুবিধার পরিবর্তন
শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল হওয়ার আগে ৫১ জন সাবেক এমপি এই সুবিধার আওতায় গাড়ি আমদানি করেছিলেন। এর মধ্যে ছয়জন সুবিধাটি ব্যবহার করে গাড়ি খালাস করেছেন। তাঁরা হলেন সৈয়দ সায়েদুল হক, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, ফয়জুর রহমান, আবুল কালাম, অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ ও গোলাম ফারুক। এঁরা ৫১ কোটি টাকার শুল্কসুবিধা পেয়েছেন।

তবে, শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল হওয়ার পর একমাত্র ফরিদপুর-৩ আসনের সাবেক এমপি এ কে আজাদ শুল্ক-কর পরিশোধ করে গাড়ি খালাস করেন। তিনি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার মডেলের একটি গাড়ির জন্য ৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা শুল্ক দিয়েছেন।

নিলামে অংশগ্রহণের সুযোগ
দেশের যেকোনো স্থান থেকে আগ্রহী ব্যক্তিরা অনলাইনে এই নিলামে অংশ নিতে পারবেন। সাবেক এমপিদের বিলাসবহুল এই গাড়িগুলো বিক্রির মাধ্যমে বড় অঙ্কের রাজস্ব আয় করার ব্যাপারে কাস্টমস আশাবাদী।

এখন দেখার বিষয়, এই নিলাম প্রক্রিয়ায় কতটুকু সফল হয় এবং সরকার কতটা রাজস্ব আয় করতে পারে!

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ