আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২০/০১/২০২৫ ১২:৫৫পি এম
এমবাপ্পে’র দুর্দান্ত পারফরম্যান্স
ফুটবলের প্রতিটি ম্যাচে কিছু মুহূর্ত এমন থাকে যা ইতিহাসে স্থান পায়। সেই মুহূর্তগুলোতে কিছু খেলোয়াড় নিজের নাম ছড়িয়ে দেন পুরো বিশ্বে। ঠিক তেমনই এক ‘ম্যাজিক’ দেখালেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। লাস পালমাসের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের দুর্দান্ত জয় এবং এমবাপ্পের অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স নতুন করে আলোচনায় এসেছে। এই জয়টি শুধু রিয়াল মাদ্রিদকে শীর্ষে ফিরিয়ে নিয়ে আসেনি, বরং কোচ কার্লো আনচেলত্তির বিশ্বাস আরও শক্তিশালী করেছে। এমবাপ্পে প্রমাণ করেছেন, কেন তাকে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে গণ্য করা হয়।
খেলা শুরু হওয়া মাত্রই ধাক্কা খেল রিয়াল:
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ম্যাচ শুরু হওয়ার পর মাত্র ২৮ সেকেন্ডেই গোল খেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। লাস পালমাসের ফাবিও সিলভা রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষককে পরাস্ত করে দলের প্রথম গোলটি করেন, যা ছিল লা লিগার ইতিহাসে রিয়ালের বিপক্ষে দ্বিতীয় দ্রুততম গোল। এই গোলটি রিয়াল সমর্থকদের জন্য ছিল এক ধরনের চমক, কিন্তু রিয়াল তারকা এমবাপ্পে দারুণভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ম্যাচটি এক নতুন দিক থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।
এমবাপ্পে’র দুর্দান্ত পারফরম্যান্স:
রিয়াল মাদ্রিদ পেনাল্টি পেয়ে সমতা ফেরায়, এবং সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে দলের হয়ে প্রথম গোলটি করেন এমবাপ্পে। এরপর ব্রাহিম দিয়াজের গোলের মাধ্যমে রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে যায়। এমবাপ্পে আবারও ৩ মিনিট পর দ্বিতীয় গোলটি করেন, এবং প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে তুমুল দাপট দেখাতে থাকেন। রিয়ালের জন্য এমবাপ্পে ছিল এক ভয়ঙ্কর আতঙ্ক। দ্বিতীয়ার্ধে রদ্রিগো আরও একটি সুন্দর গোল করে স্কোরলাইন ৪-১ করে দেয়, যা রিয়ালের জয় নিশ্চিত করে।
এমবাপ্পে’র ৩০০ গোলের মাইলফলক:
এমবাপ্পে এই ম্যাচে দুটি গোল করে ক্লাব ক্যারিয়ারে তার ৩০০ গোল পূর্ণ করেন। এর মধ্যে ১৮টি গোল তিনি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে, ২৭টি গোল করেছেন মোনাকোর হয়ে, এবং ২৫৬টি গোল পিএসজির হয়ে। তবে গোলের সংখ্যার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল তার মাঠে উপস্থিতি—তিনি শুধু গোল করেননি, পাশাপাশি প্রতিপক্ষের বক্সে সর্বোচ্চ ১২টি টাচ এবং ৫টি সুযোগ তৈরি করে মাঠে মুগ্ধতা সৃষ্টি করেছেন।
আনচেলত্তির প্রশংসা:
কোচ কার্লো আনচেলত্তি এমবাপ্পের পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ হয়ে বলেন, "সে বিশ্বের সেরা সেন্টার ফরোয়ার্ড। তার গতি ও কৌশলগত দৌড় যখন সেন্টার পজিশনে ব্যবহার করা হয়, তখন তা প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ানক হয়ে ওঠে।" আনচেলত্তি আরও যোগ করেন, "এমবাপ্পে শুধুমাত্র গোল করার ক্ষমতা রাখে না, তার উপস্থিতি এবং প্রতিপক্ষের ডিফেন্সকে ভেঙে দেওয়ার দক্ষতা তাকে বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের মধ্যে একটি করে তোলে।"
দলের ঘুরে দাঁড়ানো:
যদিও রিয়াল মাদ্রিদকে বার্সেলোনার বিপক্ষে সুপারকোপা দে এস্পানার ফাইনালে ৫-২ গোলে পরাজিত হতে হয়েছিল এবং কোপা দেল রের ম্যাচে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে জয় পেতে হয়েছিল, এই জয়ে তারা সমস্ত হতাশাকে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদ তার অপ্রত্যাশিত পরাজয় এবং দলের বিরুদ্ধে সমালোচনা সত্ত্বেও এবারই প্রথম লা লিগার শীর্ষে পৌঁছেছে।
আনচেলত্তি বলেন, “সমালোচনা আমাদের জন্য একটা জাগরণ ছিল। এটা দুঃখজনক, তবে আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। দলের ঘুরে দাঁড়ানো আমাকে বেশ সন্তুষ্ট করেছে।”
রিয়াল মাদ্রিদ শীর্ষে ফিরে এসেছে:
এই ম্যাচের পর রিয়াল মাদ্রিদ আবারও শীর্ষে ফিরে এসেছে, এবং তাদের সফলতার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তার এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নিশ্চিতভাবেই আধুনিক ফুটবলের সেরা তারকাদের একজন হিসেবে তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে। রিয়াল মাদ্রিদকে শীর্ষে ফিরিয়ে এনে, এমবাপ্পে প্রমাণ করেছেন, কেন তাকে ফুটবলের এক অমূল্য রত্ন বলা হয়।