আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৮/০১/২০২৫ ০৩:৫৫পি এম
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড: আ.লীগ নেতা শেখ জাকির গ্রেপ্তার
কুমিল্লার মুরাদনগরে ছাত্র জনতার ওপর হামলা ও হত্যার ঘটনায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থেকে তাকে আটক করা হয়।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, রামপুরা থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলার পলাতক আসামি শেখ জাকিরকে গ্রেপ্তার করে রাতেই রামপুরা থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
২০টি মামলার আসামি ও স্বঘোষিত সম্রাট
গ্রেপ্তার হওয়া শেখ জাকির হোসেন বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। থানা সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যাসহ প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে।
জানা যায়, একসময় বাঙ্গরা বাজারে চা-সিগারেট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন শেখ জাকির। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর চাঁদাবাজি, জমি দখল, এবং ড্রেজার ব্যবসার মাধ্যমে নিজের শক্তিশালী সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। ২০২২ সালে দলের প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান হন। ব্যবসায়ীদের ওপর তার জুলুম এতটাই প্রকট ছিল যে, দোকানে তালা লাগিয়ে জোর করে চাঁদা আদায় করতেন।
উত্থান থেকে পতন
সরকার পরিবর্তনের পরেও তার শক্তিশালী প্রভাব বহাল ছিল। এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘদিন ধরে শেখ জাকির তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে এবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় এবং পুলিশের অভিযানে তিনি ধরা পড়েন।
এই গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ স্বস্তি প্রকাশ করলেও অনেকে আরও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
অপরাধের চক্র ভাঙার প্রত্যাশা
এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেখ জাকিরের বিরুদ্ধে থাকা বাকি মামলাগুলোতেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার অপরাধীদের কোনো ছাড় দেবে না বলেও তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই গ্রেপ্তার এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। শেখ জাকিরের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এবার কি স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে? তা নিয়ে সকলের নজর এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে।