আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২০/০১/২০২৫ ০১:১০পি এম
ট্রাম্পের শপথগ্রহণের পরই নির্বাহী আদেশের ঝড়! নতুন যুগের সূচনা
২০ জানুয়ারি, ২০২৫ – যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। শপথ গ্রহণের পরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের মতে, তার প্রশাসন শপথ গ্রহণের প্রথম দিনেই "ঐতিহাসিক গতি ও শক্তি" নিয়ে কাজ শুরু করবে, যা দেশের ভবিষ্যতকে নতুন পথে পরিচালিত করবে।
এটা হবে তার নতুন প্রশাসনের প্রথম পদক্ষেপ
২০ জানুয়ারি, সোমবার, ওয়াশিংটন ডিসির ওয়ান এরেনা থেকে ট্রাম্প তার হাজার হাজার সমর্থকের সামনে বক্তব্য রেখেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন যে, আগামী চার বছরে দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি পরিবর্তন হবে এবং তার সমর্থকরা শিগগিরই সেই পরিবর্তন দেখতে পাবেন। নির্বাচনে তার বিজয়ের উদযাপন করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, "আমরা আমেরিকাকে প্রথমে রাখবো, আর কাল থেকেই এর কাজ শুরু হবে।"
ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, তিনি তার প্রথম দিনের কাজ হিসেবে, একাধিক নির্বাহী আদেশে সই করবেন। এর মধ্যে রয়েছে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, পরিবেশ সুরক্ষায় নিয়ম শিথিল করা এবং ডাইভারসিটি প্রোগ্রাম বন্ধ করা। পাশাপাশি তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়ন, সরকারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নীতির বাস্তবায়ন করবেন।
নির্বাহী আদেশের ঝড়!
তিনি বলেন, "আমরা ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেব, যা আগামী দিনে দেশের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।" সোমবারের কর্মসূচি অনুযায়ী, ট্রাম্প তার প্রথম দিনেই দুই শতাধিক নির্বাহী আদেশে সই করবেন, যা অনেকেই আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তার মধ্যে থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ আদেশ হলো:
অবৈধ অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া
পরিবেশ নীতি শিথিল করা
জাতীয় শিক্ষার দায়িত্ব রাজ্যগুলোর হাতে ফিরিয়ে দেওয়া
ট্রান্সজেন্ডার নারীদের 'নারী' ক্রীড়া বিভাগে প্রতিযোগিতা বন্ধ করা
এছাড়া তিনি বাইডেন প্রশাসনের "উগ্র ও উদ্ভট নির্বাহী আদেশ" বাতিল করবেন বলেও ঘোষণা করেছেন।
জাতীয় ঐক্য, শক্তি এবং ন্যায্যতার বার্তা
শপথ নেওয়ার পর, ট্রাম্প তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে একটি ঐক্যপূর্ণ এবং শক্তিশালী বক্তব্য দেবেন বলে জানিয়েছেন। তার ভাষণের মূল বিষয় হবে "ঐক্য, শক্তি এবং ন্যায্যতা", যা আমেরিকার জনগণের মধ্যে সম্প্রীতি এবং দৃঢ়তাকে জোরদার করবে।
তিনি বলেন, "আমরা একসঙ্গে কাজ করব, এবং দেশকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবো। আমাদের যে শক্তি আছে, তা বিশ্বের অন্য কোথাও নেই।"
শপথগ্রহণের অনুষ্ঠান:
রোববার তুষারপাত ও তীব্র ঠান্ডার কারণে, ২০২৫ সালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে অনুষ্ঠিত হবে। তাপমাত্রা শূন্যের নিচে থাকলেও, অনুষ্ঠানের ভাবগাম্ভীর্য এবং ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের তীব্রতা তা কাটিয়ে উঠবে। শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন তার ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র, এরিক ট্রাম্প এবং এরিকের স্ত্রী লারা ট্রাম্প।
বিজয়ের পরবর্তী পদক্ষেপ:
ট্রাম্পের সমর্থকরা আশা করছেন, তিনি তার প্রশাসন পরিচালনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সংকটগুলি দ্রুত সমাধান করবেন। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সতর্ক করে জানিয়েছেন, তার কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সময় এবং প্রচুর খরচ লাগতে পারে, বিশেষত অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কারের পরিকল্পনা।
শেষ কথা: এই শপথ গ্রহণের মাধ্যমে ট্রাম্প আবারো দেশের নেতৃত্বে এসে দেশের ভবিষ্যৎ গঠনের জন্য নিজস্ব পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তার ঘোষণা করা নির্বাহী আদেশগুলোর পরবর্তী প্রভাব দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্পষ্ট হবে। এখন দেখার বিষয়, তার এই পদক্ষেপগুলি কতটুকু সফল হয় এবং এর ফলে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কী ধরনের পরিবর্তন আসে।