আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৮/০১/২০২৫ ০৩:৪২পি এম
ভ্যাট বাড়ানোর পরিবর্তে খরচ কমানোর পরামর্শ বিএনপির: জনগণের ওপর বোঝা কমানোর দাবি
ভ্যাট বৃদ্ধির পরিবর্তে অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্প ও পরিচালন ব্যয় কমানোর মাধ্যমে অর্থ সাশ্রয়ের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে সরকার যদি অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়, তাহলে বাজেটে ন্যূনতম ১ লাখ কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব হবে।
শনিবার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, “সরকারের উচিত উন্নয়ন বাজেট পুনর্বিবেচনা করে আর্থিকভাবে অযৌক্তিক প্রকল্প বাদ দেওয়া। এতে প্রায় ২০ শতাংশ খরচ কমানো সম্ভব হবে। পরিচালন ব্যয় ১০ শতাংশ কমানোর মাধ্যমে ৫০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা যাবে।”
এছাড়া স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর ঋণ বাজেট কমানোর প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, “২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ খাতে ৫০,৮৭৫ কোটি টাকা বাজেট করা হয়েছে। এটি সাময়িকভাবে কমিয়ে দেশের অর্থনৈতিক চাপ লাঘব করা যেতে পারে।”
অর্থনীতিতে সঠিক নীতির অভাব
মির্জা ফখরুল সরকারের মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির সমন্বয়হীনতার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, ওষুধ, এলপিজি, এবং মোবাইল সেবার মতো খাতে কর বাড়ালে জনগণের ভোগান্তি আরও বৃদ্ধি পাবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “পরোক্ষ কর বৃদ্ধি নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর বোঝা তৈরি করে। তাই সরকারের উচিত পরোক্ষ করের পরিবর্তে প্রত্যক্ষ কর বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া।”
ভ্যাট বৃদ্ধির সমালোচনা এবং বিকল্প প্রস্তাব
মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকারের বাজেট ঘাটতি মেটানোর সহজ সমাধান ভ্যাট বাড়ানো নয়। বরং খরচ কমানোর মাধ্যমে তা মোকাবিলা করা উচিত। ভুল নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে জনগণের ওপর করের বোঝা বাড়ালে তা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত করবে।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জবিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান
বিএনপি মহাসচিব সরকারের উদ্দেশে বলেন, “সাধারণ মানুষের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং দেশের সার্বিক অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য আপনারা জনগণের কল্যাণকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিন। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কার্যকর ও সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করুন।”
এ ধরনের পদক্ষেপে দেশের অর্থনীতি যেমন উন্নতি লাভ করবে, তেমনই জনগণের জীবনযাত্রায় স্বস্তি ফিরবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।