আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৭/০১/২০২৫ ১১:২৬এ এম
পদ নেই, তবু ৭ হাজার পদোন্নতি! রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর নজিরবিহীন কাণ্ড
রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকে প্রায় ৭ হাজার ২১৫ কর্মকর্তাকে সুপারনিউমারারি ভিত্তিতে (পদ ছাড়াই পদায়ন) পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, যা প্রচলিত বিধিবিধান স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এই বিষয়ে ব্যাংকগুলোর কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
গত বুধবার সোনালী, জনতা, অগ্রণী এবং রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইওকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোতে জনবল নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নির্দেশনা অনুসরণ বাধ্যতামূলক। অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে এত বিশাল সংখ্যক পদোন্নতি দেওয়া অনিয়ম এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল।
কীভাবে ঘটল এই পদোন্নতি?
সোনালী ব্যাংকে ২৩ ডিসেম্বর একদিনেই ২,১৯২ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়, যার মধ্যে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) থেকে সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) পদে পদোন্নতি পান ৪৩৩ জন। পরদিন, ২৪ ডিসেম্বর, অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তারা পদোন্নতির দাবিতে পরিচালকদের ঘেরাও করেন। ফলে ৩,০৭৭ জন কর্মকর্তাকে সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। জনতা ও রূপালী ব্যাংকেও একই ধরনের পদোন্নতির ঘটনা ঘটেছে।
ব্যাংকের কার্যক্রমে প্রভাব
গণপদোন্নতির ফলে ব্যাংকগুলোর শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের জন্য ব্যক্তিগত কক্ষ ও চেয়ার-টেবিলের সংকট তৈরি হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলোর আর্থিক সংস্থান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ব্যাংকগুলোকে আগামী ২২ জানুয়ারির মধ্যে এই পদোন্নতির কারণ ব্যাখ্যা এবং এর ফলে ব্যাংকের আর্থিক ক্ষতির হিসাবসহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
নজিরবিহীন এই অনিয়মের ভবিষ্যৎ
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতে ব্যাংকিং কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।