আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৭/০১/২০২৫ ১১:২৫এ এম
চাহিদা বৃদ্ধিতে কমছে ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদের হার
ব্যাংকগুলোর তারল্য বিনিয়োগে নতুন ঝোঁক, ভবিষ্যতে সুদহার আরও কমার সম্ভাবনা
সরকারের স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি ধার নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ দুটি মাধ্যম হলো ট্রেজারি বিল ও বন্ড। ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে এই দুটি টুলের সুদের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৫ জানুয়ারি ৪ হাজার কোটি টাকার ৫ বছর মেয়াদি বন্ড বিক্রির নিলামে ব্যাংকগুলো প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার অফার দেয়। ফলে, সর্বশেষ নিলামে এই বন্ড বিক্রি হয়েছে ১২ দশমিক ০৯ শতাংশ সুদে। যা এর আগের নিলামের ১২ দশমিক ৩৮ শতাংশের তুলনায় ২৯ বেসিস পয়েন্ট কম।
একইভাবে, ৯১ দিন, ১৮২ দিন এবং ৩৬৪ দিনের ট্রেজারি বিলগুলোর সুদহারও এক সপ্তাহের ব্যবধানে সর্বোচ্চ ১৪ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমেছে।
তারল্যের প্রাচুর্য বাড়ছে
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, গত কয়েক মাসে আমানত প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাওয়া এবং ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ার ফলে ব্যাংকগুলোর তারল্য বেড়ে গেছে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দেওয়ার পর থেকে এই প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায়।
এ অবস্থায় ব্যাংকগুলো বিনিয়োগের বিকল্প খুঁজতে গিয়ে নিরাপদ ও নিশ্চিত রিটার্নের জন্য ট্রেজারি বিল ও বন্ডে ঝুঁকছে।
বিনিয়োগে বন্ডের নিরাপত্তা কেন বেশি?
সরকারের গ্যারান্টি থাকায় ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ অনেক বেশি নিরাপদ। পাশাপাশি, এসব বিনিয়োগে ব্যাংকগুলোর সিআরআর ও এসএলআর জমা রাখার প্রয়োজন হয় না। ঋণের চাহিদা কম থাকায় এবং ঝুঁকি এড়াতে ব্যাংকগুলো এখন এই মাধ্যমেই বেশি মনোযোগী হচ্ছে।
ভবিষ্যতে সুদহার আরও কমতে পারে
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “সরকার খরচ কমানোর কারণে ঋণ চাহিদা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে সামনের দিনগুলোতে বিল ও বন্ডের সুদহার আরও কমতে পারে।”
মূল্যস্ফীতি কমলে সুদহারে আরও পতন হতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন এই ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞ।
বিশ্লেষণ:
এই প্রবণতা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে দেশের ব্যাংকিং খাতে তারল্য প্রাচুর্য এবং বিনিয়োগের সীমিত বিকল্পের কারণে ট্রেজারি বিল ও বন্ড ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। ব্যাংকগুলোর জন্য এটি একটি স্থিতিশীল বিনিয়োগ মাধ্যম হলেও সুদহার ক্রমশ কমতে থাকায় দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিশ্লেষণ প্রয়োজন।