শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
Verified আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৬/০১/২০২৫ ০৪:১০পি এম

আইএমএফের শর্ত মানতে সরকার কেন ভ্যাট বাড়াচ্ছে?

আইএমএফের শর্ত মানতে সরকার কেন ভ্যাট বাড়াচ্ছে?
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) দ্বারা নির্ধারিত শর্তাবলীর কারণে সরকার সম্প্রতি ভ্যাট বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই পদক্ষেপের পিছনে রয়েছে সরকারের দায়বদ্ধতা এবং আইএমএফের চাপে অর্থনীতির উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় একাধিক সংস্কারের বাস্তবায়ন।

আইএমএফের চাপ এবং এর প্রভাব
বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এ অবস্থায় আইএমএফের সহায়তা গ্রহণের পর, দেশের সরকারকে কিছু কঠোর শর্ত পূরণ করতে হবে। তার মধ্যে অন্যতম হলো দেশের ভ্যাট হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য হল সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়ানো এবং বাজেট ঘাটতি কমানো।

আইএমএফ বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের প্রয়োজনীয় সেবা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য রাজস্ব বৃদ্ধি অপরিহার্য। ফলে ভ্যাট বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকার এই রাজস্ব প্রাপ্তির পথ সুগম করতে চাচ্ছে। তবে, এই পদক্ষেপের কিছু নেতিবাচক প্রভাবও থাকতে পারে যা সাধারণ জনগণের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

ভ্যাট বৃদ্ধির উদ্দেশ্য
ভ্যাট বৃদ্ধির মূল উদ্দেশ্য হলো, দেশীয় অর্থনীতির জন্য রাজস্ব সংগ্রহের একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদী উপায় তৈরি করা। সরকারের উদ্দেশ্য হলো যে, উচ্চ ভ্যাটের মাধ্যমে অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জন করে সামাজিক উন্নয়ন এবং অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা।

যেহেতু দেশটি উন্নয়নশীল, আইএমএফের শর্তাবলী মেনে রাজস্ব বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছে। এজন্য সরকারের প্রতি আইএমএফের সুপারিশ ছিল যে, রাজস্ব সংগ্রহের জন্য ভ্যাটের হার বাড়ানো দরকার।

জনগণের ওপর প্রভাব
ভ্যাট বৃদ্ধি সাধারণত মূল্যস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ানোর ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে, নিম্ন আয়ের মানুষ বা সাধারণ জনগণ অর্থনৈতিক চাপে পড়ে যেতে পারে। সরকারের উচিত এই পরিবর্তনের সঙ্গে জনগণের সহনশীলতা বজায় রাখার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা, যেন তারা এই ধরনের পদক্ষেপের দ্বারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

বিকল্প ব্যবস্থাপনা
ভ্যাট বৃদ্ধির সাথে সাথে, সরকারের পক্ষ থেকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজন। এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং উন্নত অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন করা উচিত যাতে সরকারি খাতগুলোর উন্নয়ন হতে থাকে, কিন্তু জনগণের ওপর চাপও সৃষ্টি না হয়।

এছাড়াও, সরকারের উচিত আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেন দেশটির আয় বাড়ানোর জন্য নতুন নতুন উপায় খুঁজে পাওয়া যায় এবং জনগণের আর্থিক ক্ষমতা ক্ষুন্ন না হয়।

আইএমএফের শর্ত পূরণের জন্য সরকার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় পরিবর্তন হতে পারে। তবে, এর সঠিক বাস্তবায়ন এবং জনগণের প্রতি সহানুভূতির ভিত্তিতে এই পরিকল্পনাটি সফল হতে পারে। রাজস্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে সরকারের উচিত জনগণের সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য একটি কার্যকর সমন্বয় তৈরি করা।

লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ