১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান: কারামুক্ত হলেন লুৎফুজ্জামান বাবর
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর ১৭ বছর ৬ মাস পর কারামুক্ত হয়েছেন। আজ সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। তার মুক্তিকে কেন্দ্র করে কারাগারের সামনে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থকের ভিড় জমে। ফুলের মালা ও উচ্ছ্বাসের মাধ্যমে তারা তাদের নেতাকে বরণ করে নেন।
কারাগারের সামনে দৃশ্যপট
লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তির মুহূর্তে কেরানীগঞ্জ কারাগারের মূল ফটকে উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অসংখ্য নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা তার মুক্তির জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন। বাবর যখন খোলা গাড়িতে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়ান, তখন উপস্থিত জনতা স্লোগান ও ফুল দিয়ে তাকে স্বাগত জানান।
মামলা ও মুক্তির পটভূমি
১. বাবরকে ২০০৭ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। এই মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল।
২. এছাড়াও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হন।
৩. তবে, ধারাবাহিক আপিল শুনানির মাধ্যমে একে একে মামলাগুলোতে তিনি খালাস পান।
৪. সর্বশেষ, গত মঙ্গলবার উচ্চ আদালতের রায়ের কপি কারাগারে পৌঁছানোর পর তার মুক্তির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়।
উচ্ছ্বাসে ভাসল নেতা-কর্মীরা
বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেন, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ দলের শীর্ষ নেতাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি ও অপমানিত করার জন্য বিভিন্ন মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এ বিষয়ে এক নেতা বলেন, "বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে দমন করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তবে, বাবর সাহেবের মুক্তি আমাদের আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চার করবে।"
কারামুক্তির পর বাবর সরাসরি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে যাবেন বলে জানা গেছে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি তার নিজ বাসভবনে ফিরবেন।
নেতা-কর্মীদের প্রতিক্রিয়া
১. নেত্রকোনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুজ্জামান বাবরকে ঘিরে নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা কারাগারের সামনে জড়ো হন।
২. তারা বাবরকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার’ দাবি করে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
৩. একজন কর্মী বলেন, "বাবর সাহেবের মুক্তি আমাদের জন্য বিজয়ের বার্তা। তিনি সবসময় আমাদের পাশে ছিলেন, এবার আমরাও তার পাশে থাকব।"
১৭ বছরেরও বেশি সময় কারাভোগের পর লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তি শুধু তার পরিবার নয়, বিএনপির জন্যও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তার মুক্তির পর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।