הבא

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী: বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ

11 צפיות· 04/05/25
Imran Hossain
Imran Hossain
2 מנויים
2

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বকেয়া বেতন পরিশোধসহ নানা দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা।

রোববার সকাল থেকে উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের খোয়াজনগর গ্রামে সৈন্যারটেক এলাকায় গোল্ডেন সন লিমিটেড কারখানায় আন্দোলন শুরু হয়।

দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে সকাল ছয়টা থেকে আন্দোলনে নামেন ওই কারখানার শ্রমিকেরা। সর্বশেষ দুপুর পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কারখানার সামনে অবস্থান করছিলেন। এরআগে সকাল ছয় থেকে নয়টা পর্যন্ত প্রায় তিন ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে শ্রমিকেরা।

এসময় দেখা যায়, নারী শ্রমিকেরা সড়কের উপর বসে আছে। প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে সড়কে গাড়ি আটকে থাকে। সকাল পৌনে নয়টায় সেনাবাহিনীর একটি দল এসে শ্রমিকদের সড়কদের উপর থেকে সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

এছাড়া সকাল সাড়ে নটায় সিএমপি কর্ণফুলী থানা পুলিশের একটি দল এসে শ্রমিকদের সাথে কথা বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন।

কারখানার শ্রমিক মোহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, শ্রমিকদের গত মার্চ ও এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। এরবাইরেও অনেক শ্রমিক আছে যারা কয়েকমাস ধরে বেতন পাচ্ছে না। আমরা সারা মাস কাজ করেও পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে পারিনা।

তিনি আরও বলেন, আমাদের শ্রমিকরা বছরের পর এখানে কাজ করছে। তাদের বেতনবৃদ্ধিও করা হচ্ছে। বেতন বৃদ্ধির কথা বললেই তারা চাকরী থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন।

কারখানার আরেক শ্রমিক নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা কোন মাসেই ঠিকমতো বেতন পাইনা। মাসের শুরুতে বেতন চাইতে গেলে বলে ‘সময় হলে বেতন পাবে, না হলে চাকরি থেকে চলে যাও।’ আমরা কোথায় যাব? চাকরী করেও বেতন পাই না। পরিবারকে জবাব দিতেও পারিনা।

বিভিন্ন দাবি আদায়ে শ্রমিকরা এই আন্দোলন থেকে কয়কটি দাবি তুলে ধরেছে শ্রমিকরা তারমধ্যে রয়েছে, পূর্বের সকল বকেয়া পরিশোধ করা, শ্রমিকের বেতন বাড়ানো, ১-১০ তারিখের মধ্যে পূর্ণ বেতন পরিশোধ, এছাড়া কোনো শ্রমিককে চাকরি থেকে অব্যহতি দিলে তাহলে ঐ শ্রমিকের প্রাপ্য টাকা সরকারি নিয়মে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা।

কারখানার নারী শ্রমিক সুফিয়া বেগম বলেন, আমরা কারখানায় চাকরি করি পেটের দায়ে। তারা রমজান মাসেও আমাদের উপর চাপাচাপি করেছে। আমরা ইফতার করার সময় পর্যন্ত পাইনি। কথায় কথায় আইডি কার্ড কেড়ে নিয়ে আমাদের চলে যেতে বলে। পরে কারখানার সামনে কান্নাকাটি করলে তারা আবার চাকরিতে ফিরিয়ে নেয়।

একাধিক শ্রমিকরা বলেন, আমরা আমাদের পাওনা বেতন ও নায্য অধিকার চেয়ে আন্দোলনে নেমেছি। কারখানা কর্তৃপক্ষ বা কারো ক্ষতি করতে নয়।

কারখানার স্টোর সেকশনের এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কর্তৃপক্ষ কেন আমাদের বেতন দিতে পারছে না? কাজ তো থেমে নেই, শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক পাঁচ ঘন্টা অভারটাইম করানো হচ্ছে। তারপরেও কেন সঠিক সময় বেতন দেবে না?

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা করে শ্রমিক সালাহউদ্দীন বলেন, আমরা পেটের দায়ে মাঠে নেমেছি। আমরা যারা আন্দোলনে এসেছি তাদের হয়তবা চাকরি হারাতে হতে পারে। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ে সহায়তা করুন এবং চাকরির নিরাপত্তা দিন।

কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রুম্মান ইমাম বলেন, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হবে শীঘ্রই। প্রসাশনের সহায়তায় শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

জানতে চাইলে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ শরীফ বলেন, কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে, এমন আশ্বাসে শ্রমিকেরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।

উল্লেখ্য, গোল্ডেন সন লিমিটেড নামক এই কারখানায় ২০টি আলাদা ইউনিটে হাজারও শ্রমিক কাজ করে। কারখানায় ইলেকট্রনিক ফ্যান, বিভিন্ন খেলনা, পারফিউম সহ নানা ধরনের পণ্য উৎপাদন করা হয় বলে শ্রমিকরা জানা যায়।

להראות יותר

 0 הערות sort   מיין לפי


הבא