শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
Verified আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১০/১২/২০২৪ ১২:০৯পি এম

বাংলাদেশের ভারত নির্ভরতার ভ্রান্ত ধারণা

বাংলাদেশের ভারত নির্ভরতার ভ্রান্ত ধারণা
বাংলাদেশ আজ একটি আত্মনির্ভরশীল রাষ্ট্র। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে, এই দেশ তার সক্ষমতা, আত্মপ্রত্যয় এবং সংগ্রামের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। এমন সময়ে যখন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বিভিন্ন দিক থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মুখে, একটি বিষয় গভীরভাবে আলোচনার দাবি রাখে: যদি ভারত বাংলাদেশের জন্য সব ধরনের সুবিধা বন্ধ করে দেয়, তবে কী হবে?

আমরা দেখেছি, প্রতিবেশী সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য ও সমতার ঘাটতি কিভাবে কৌশলগত ও কূটনৈতিক জটিলতা তৈরি করে। কিন্তু বাংলাদেশের শক্তি হলো এর জনগণের আত্মবিশ্বাস এবং স্বাধীনভাবে চলার সক্ষমতা।

বাংলাদেশ: এক আত্মনির্ভরশীল রাষ্ট্র
বাংলাদেশ আজ আর ১৯৭১-এর পরের অর্থনৈতিক সংকটের দেশ নয়। বর্তমানে, দেশটি তার অর্থনীতি, কৃষি, শিল্প এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে নিজেকে স্থিতিশীল করেছে।

১. অর্থনীতির দৃঢ় ভিত্তি
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প এখন বৈশ্বিক পর্যায়ে তার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার রয়েছে।
প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করে তুলেছে।

২. খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা
কৃষিক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি ও পরিকল্পনার ফলে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ।

৩. কূটনৈতিক বিকল্প
ভারতের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ অনেক দেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। চীন, জাপান এবং মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও কৌশলগত চুক্তিগুলো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে আরো উজ্জ্বল করেছে।

ভারতের সুবিধা বন্ধ হলে কী ঘটবে?
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেকগুলো চুক্তি রয়েছে, যার মধ্যে পানির বণ্টন থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। তবে, ভারত যদি সব সুবিধা বন্ধ করে দেয়, তাহলে সেটা কেবল বাংলাদেশের জন্যই চ্যালেঞ্জ নয়, ভারতের জন্যও বড় সংকট সৃষ্টি করবে।

পানির সংকট:
তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। ভারত যদি তার অংশগ্রহণ কমিয়ে দেয়, বাংলাদেশ তার নিজস্ব পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সংকট মোকাবিলা করতে পারে।

বাণিজ্যিক নির্ভরশীলতা কমানো:
ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ চীন ও অন্যান্য দেশ থেকে পণ্য আনতে সক্ষম।

রাজনৈতিক জবাবদিহিতা:
বাংলাদেশের জনগণ রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলায় সব সময় ঐক্যবদ্ধ। যদি ভারত কোনো পদক্ষেপ নেয় যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে আঘাত করে, তাহলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর সমালোচনা হবে।

স্বাধীনভাবে টিকে থাকার শক্তি
বাংলাদেশ তার ইতিহাস থেকে শিখেছে যে, সংকটে মাথা নত করা কোনো বিকল্প নয়। পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্পগুলো প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশ চাইলেই নিজের শক্তিতে বড় সাফল্য অর্জন করতে পারে।

ভারত যদি বাংলাদেশের জন্য সুবিধা বন্ধ করে দেয়, তবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা থামবে না। বাংলাদেশ তার আত্মবিশ্বাস, কৌশলগত চিন্তা এবং জনগণের ঐক্যের মাধ্যমে সব বাধা অতিক্রম করবে।

এই সত্যটিকে অস্বীকার করা যায় না যে, বাংলাদেশ এখন আর কারো মুখাপেক্ষী নয়। স্বাধীনভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই জাতি তার সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।

আব্দুল্লাহ আল মামুন, লেখক ও সাংবাদিক

#বাংলাদেশ #ভারত #স্বাধীনতা #কূটনীতি #আর্থিকশক্তি #রেমিট্যান্স #তিস্তা #পদ্মাসেতু #জাতীয়ঐক্য #বাংলারশক্তি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ