বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ০২/০২/২০২৫ ০৬:৪৯পি এম

ভাঙ্গায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২০, আহতদের মধ্যে মহিলা ও শিশু

ভাঙ্গায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২০, আহতদের মধ্যে মহিলা ও শিশু
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বিএনপির দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে মহিলা এবং শিশু অন্তর্ভুক্ত। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর, এবং তাদের ভাঙ্গা ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই সহিংস ঘটনা নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দীর্ঘদিনের বিরোধের ফল: আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষের পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক বিরোধ এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিবাদ। ঘারুয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন আনু মুন্সি এবং একই গ্রামের কৃষক দলের সাবেক সভাপতি করিম মোল্লার মধ্যে এই বিরোধটি চলে আসছিল।

রবিবার সকালে শরিফাবাদ হাটে একটি মিটিং শেষে বাড়ি ফেরার পথে খারদিয়া গ্রামে আনোয়ার হোসেনের সমর্থকরা করিম মোল্লার সমর্থকদের ওপর হামলা চালালে এই সংঘর্ষ বাঁধে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘণ্টাখানেক ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং সেই সাথে চারটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এর ফলে উভয়পক্ষের প্রায় ২০ জন নেতাকর্মী আহত হন।

আহতদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ সদস্যরা
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা এবং সাধারণ সদস্য রয়েছেন। বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মুন্সি, ইদ্রিস মোল্লা, জিহাদ আলী শেখ, আসমা বেগম, আজিবর খাঁ, ছামাদ আলী, রবি ফরাজী, নান্নু মিয়া, রমজান খাঁ, শাহাবুদ্দিন মুন্সি এবং কামাল ফকির সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা গুরুতর আহত হয়েছেন।

এছাড়া, করিম মোল্লার সমর্থকরা অভিযোগ করেছেন যে আনু মুন্সি তাদেরকে আগেও বিভিন্ন মিটিংয়ে যেতে বাধা দিয়েছেন এবং হুমকি দিয়েছেন। তারা জানান, ২৫ জানুয়ারি মালিগ্রাম হাটে কৃষক দলের মিটিংয়ে তাঁদের মিটিং বন্ধ করতে আনু মুন্সির সমর্থকরা হুমকি দেয়।

পুলিশের অভিযোজন: ঘটনার তদন্ত চলছে
এদিকে, স্থানীয় বিএনপির নেতা নিরু খলিফা জানিয়েছেন, তিনি যখন ঢাকা এয়ারপোর্টে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি খবর পান যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। নিরু খলিফা অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগের নেতা মতিয়ার রহমান, নয়ন খাঁ, চানমিয়া ও বাদল মুন্সি সহযোগিতায় আনু মুন্সির নেতৃত্বে চারটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং মহিলা সহ ১০ জন লোক আহত হন।

এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ওসি মোহাম্মদ মোকছেদুর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং তদন্ত চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, "ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

স্থানীয় পরিস্থিতি: উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশ
এই সংঘর্ষের ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক নেতারা উদ্বিগ্ন যে এই ধরনের সহিংসতা আরও বাড়তে পারে, বিশেষত নির্বাচনের সময়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে, তবে স্থানীয় জনগণ উদ্বিগ্ন তাদের নিরাপত্তা নিয়ে।

এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে এবং পুলিশের সজাগ অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক চাপের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ