বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ০৫/০২/২০২৫ ১১:০২এ এম

এবার তৃণমূলে হাত বিএনপির

এবার তৃণমূলে হাত বিএনপির
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছে বিএনপি। দল পুনর্গঠন ও শক্তিশালী করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠনের কাজ চলছে। সব জেলায় সম্মেলন শেষে জাতীয় পর্যায়ে সম্মেলনের পরিকল্পনাও রয়েছে। দলীয় কোন্দল মিটিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে পুনর্গঠন করা হচ্ছে। গত বছরের ২৫ নভেম্বর, বিএনপি ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে তৃণমূল কমিটি পুনর্গঠনের জন্য টিম গঠন করে, যা ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

গত ২০ জানুয়ারি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এই কার্যক্রম শেষ হলে দ্রুত নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করবে বিএনপি। নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যাতে অনুপ্রবেশকারীরা দলে ঢুকতে না পারে। দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম সরাসরি তদারকি করছেন তারেক রহমান এবং কেন্দ্রীয় নেতারা তার পরামর্শ নিচ্ছেন।

গত এক সপ্তাহে বিএনপি অন্তত ২০টি সাংগঠনিক জেলা শাখায় কমিটি হালনাগাদ করেছে। গত রোববার একদিনেই ১৩টি নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে, কিছু জেলায় আগের কমিটির সঙ্গে আলোচনা না করেই কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে। বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের মতে, দলকে গুণগত পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যেতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সপ্তম জাতীয় কাউন্সিল করার পরিকল্পনাও রয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, "দেশ ও জাতি গঠনে তরুণদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সুযোগ বাড়াতে হবে এবং নেতৃত্বের জায়গা তৈরি করতে হবে। তরুণ নেতারা বেশি পরিশ্রম করতে পারেন, তাই ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাদের নেতৃত্বে আনা হচ্ছে।"

২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকে বিএনপি দমন-পীড়ন, মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছে। ফলে তৃণমূলের অনেক নেতা দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। এখন পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর, তারা দলে ফিরে সংগঠন পুনর্গঠনে কাজ করছেন।

বিএনপির সাংগঠনিক জেলা শাখা ৮২টি। ২০১৯ সালে বেশিরভাগ শাখার আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়, যা বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ। আসন্ন নির্বাচনের আগে দ্রুত সময়ের মধ্যে তৃণমূলের নতুন নেতৃত্ব বাছাই করতে সম্মেলন ও কাউন্সিলের আয়োজন করা হচ্ছে। দলের সাংগঠনিক বিভাগগুলোর দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে এবং নতুন কমিটি গঠনের পর সাংগঠনিক জেলা কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করবে।

সাম্প্রতিককালে বেশ কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের একাধিক জেলা, উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে এবং সেগুলো পুনর্গঠনের কাজ চলছে।

গত রোববার ঘোষিত ১৩টি নতুন জেলার আহ্বায়ক কমিটিতে ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এই কমিটিগুলোতে নেতাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও ত্যাগকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে বিতর্কিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির অভিযোগও উঠেছে। এসব বিষয়ে তৃণমূলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সদস্যপদ নবায়ন, নতুন কমিটি গঠন ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ