বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ০৫/০২/২০২৫ ১১:৫৩এ এম

সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের ওপর বিএনপি নেতাদের হামলা!

সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের ওপর বিএনপি নেতাদের হামলা!
কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে একটি সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক সুজন মাহমুদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজিবপুর বাজারের কম্পিউটার গলিতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ অনুযায়ী, হামলাকারীরা সবাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমানের অনুসারী।

কী কারণে হামলা?

গত ৩ জানুয়ারি একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে ‘স্ব-পদে বহাল অধ্যক্ষ, নেপথ্যে উপজেলা বিএনপি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন সাংবাদিক সুজন মাহমুদ। এরপর থেকেই তাকে নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হয়। সুজনের অভিযোগ, সংবাদ প্রকাশের কারণে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন ও কৃষক দলের সদস্য সচিব মো. কাশেম তার বাসায় গিয়ে অপহরণের হুমকি দেন।

এই ঘটনার জেরে ৫ জানুয়ারি সুজন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান, শামীম আহম্মেদ, সোহেল রানা, সাব্বির হোসেন ও মো. আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

হামলার বিবরণ

সুজন মাহমুদের ভাষ্যমতে, রোববার সন্ধ্যা ৬টায় রাজিবপুর বাজারে সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন তিনি। এ সময় হঠাৎ করে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন (নেভী), সাব্বির হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শফি আলম, শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, যুবদল কর্মী রুবেল ও ছাত্রদল কর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনের একটি দল তার ওপর হামলা চালায়।

সহকর্মীরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে একটি দোকানের ভিতরে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা দোকানের মধ্যেও ঢুকে তাকে মারধর করতে থাকে। এ সময় তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিক সুজনসহ কয়েকজন সাংবাদিক ওই গলিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখনই হঠাৎ ৩০-৩৫ জনের একটি দল এসে তাকে ঘিরে ফেলে এবং আক্রমণ করে।

বিএনপি নেতাদের বক্তব্য

উপজেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সুজন আমাদের এলাকার ছেলে, আমরা তাকে ছোট ভাইয়ের মতো দেখি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে সে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করছে। আমরা তাকে শুধু জানতে চেয়েছিলাম যে, সে আওয়ামী লীগের হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে কিনা।’

রাজিবপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছি। উপজেলায় ওই সাংবাদিকের সঙ্গে কী ঘটেছে, তা জানি না। তবে আমার অনুসারীরা যদি কোনো অন্যায় করে থাকে, তবে আমি ফিরে গিয়ে এর বিচার করব।’

পুলিশের ভূমিকা

রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তসলিম উদ্দিন জানান, ‘সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমানকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করায় যুবদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এর জেরে কয়েকজন লোক সাংবাদিক সুজন মাহমুদকে লাঞ্ছিত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

এ ধরনের ঘটনায় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সংবাদ প্রকাশের কারণে সাংবাদিকদের হুমকি ও হামলার শিকার হওয়া গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ। এ ঘটনায় দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক ও সচেতন মহল।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ