ভোলা থেকে বঙ্গোপসাগরের গভীরে সাত দিন ধরে ভাসতে থাকেন তারা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান নিজেই মুখভর্তি সাদা দাড়ি কেটে ছদ্মবেশ ধারণ করেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় তিনি বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকার চারপাশে ভয়াবহ অবস্থা লক্ষ্য করেন।
বিমানবন্দরসহ অন্য কোথাও থেকে ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে তিনি সরাসরি উত্তরা এলাকায় চলে যান, যেখানে তার নিজস্ব একটি জুট মিল রয়েছে। সেখানে গিয়ে নিজের দাড়ি শেভ করেন এবং নৌপথে দেশ ত্যাগের পরিকল্পনা করেন। তদন্তে জানা গেছে, রাজধানীর ৩০০ ফুট সড়কের কাঞ্চন ব্রিজ এলাকা থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে তিনি ভোলা জেলার উদ্দেশ্যে রওনা হন। সঙ্গে ছিল স্যাটেলাইট ফোন, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককেও সঙ্গে নেন।
ভোলা থেকে বঙ্গোপসাগরের গভীরে সাত দিন ধরে ভাসতে থাকেন তারা, সুযোগ খুঁজছিলেন মিয়ানমার পাড়ি দেওয়ার জন্য। মাঝে তারা ভারত সীমান্তের কাছাকাছি পর্যন্তও পৌঁছেছিলেন, তবে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আবারও ভোলায় ফিরে আসেন।
তদন্ত সূত্রে আরও জানা যায়, একটি অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর কর্মকর্তা তাকে নৌপথে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন এবং একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ভাড়া করার ব্যবস্থা করেন। প্রথমে কোস্টগার্ডের সদস্যরা সালমানকে চিনতে না পারলেও পরে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তাকে সনাক্ত করেন।
অন্যদিকে, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ইসিজি করার পর তার হৃদরোগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশে আরও অনেক ভিআইপিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে তাদের রিমান্ডে নেওয়া হবে। তবে স্থান সংকুলানের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে সবাইকে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়।