আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২১/০১/২০২৫ ১১:৫৫এ এম
চট্টগ্রামে বেপরোয়া বিএনপি নেতাদের শাস্তি: ৫ মাসে বহিষ্কার ৩১
চট্টগ্রামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও অঙ্গসংগঠনের বেপরোয়া নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে দলটির হাইকমান্ড। গত পাঁচ মাসে শৃঙ্খলা ভঙ্গ, চাঁদাবাজি, দখল, সংঘর্ষ এবং অন্যান্য অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩১ জন নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনায় বহিষ্কার
চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ৮ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সহসভাপতি নাছির উদ্দীন চৌধুরী নাসিম এবং জাহিদ হাসান বাবুকে সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়।
২ সেপ্টেম্বর বিতর্কিত শিল্প গ্রুপ এস আলমের বিলাসবহুল ১৪টি গাড়ি সরিয়ে নিতে সহায়তার অভিযোগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানসহ তিনজনের প্রাথমিক সদস্যপদ স্থগিত করা হয়। পরে তদন্ত শেষে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
চাঁদাবাজি ও অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত নেতারা
চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি, দখল এবং অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। বিশেষত বালুমহাল, ইটভাটা, নৌঘাট, ফুটপাত, এবং মাছ বাজারে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে।
৬ সেপ্টেম্বর পটিয়া পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রশিদ মামুনকে ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়। ২০ সেপ্টেম্বর চান্দগাঁও এলাকায় যুবদলের দু'পক্ষের সংঘর্ষে এক কর্মী নিহত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
অপরাধের মাত্রা এবং দলীয় নির্দেশনা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন, দলীয় নেতাকর্মীরা কোনো ধরনের অপকর্মে জড়িত হতে পারবে না। চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজিমুর রহমান বলেন, "দলীয় পদ-পদবি থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর নেতাকর্মীদের মধ্যে সতর্কতা এসেছে। বর্তমানে চাঁদাবাজি বা অপকর্মের অভিযোগ অনেকটাই কমে এসেছে।"
অন্য ঘটনা ও বহিষ্কার আদেশ
১৩ অক্টোবর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদলের তিন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়।
১৯ অক্টোবর পাঁচলাইশ থানা বিএনপির নেতা মামুন আলী ও হাফিজ উদ্দিন ঝন্টুকে চাঁদাবাজির ঘটনায় বহিষ্কার করা হয়।
২১ অক্টোবর কর্ণফুলী উপজেলার একটি মাছ চুরির ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মো. জসিম উদ্দিন জুয়েলকে বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কারের মূল উদ্দেশ্য
দলীয় শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং দলের ইমেজ রক্ষা করতে এসব কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নাজিমুর রহমান বলেন, "দলীয় নেতাকর্মীরা যাতে কোনো অপকর্মে জড়িত না হন, সে জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ পেলেও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"
চট্টগ্রামের বিএনপির নেতাদের বহিষ্কারের এই ঘটনা দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং দলের ভাবমূর্তি বজায় রাখার একটি উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।