আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৩/০১/২০২৫ ১১:২৫এ এম
নারী কর্মীর বিদেশযাত্রা কমছে: মধ্যপ্রাচ্যের কর্মসংস্থানে হতাশা ও নির্যাতনের ছায়া
বিদেশে নারী কর্মসংস্থান: কেন কমছে সংখ্যা?
গত দুই বছর ধরে বিদেশে নারী কর্মী পাঠানোর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন, যা এই ধসের মূল কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৬৬ জন নারী কর্মী বিদেশে গেলেও ২০২৩ সালে তা কমে ৭৬ হাজার ১০৮ জনে দাঁড়ায়। ২০২৪ সালে আরও ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়ে সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ৬১ হাজার ১৫৮ জনে।
অভিজ্ঞতা: দেশে ফেরা নারী কর্মীদের কষ্টের গল্প
মানিকগঞ্জের ফিরোজা, যিনি দুই বছর সৌদি আরবে ছিলেন, দেশে ফেরার পর জানান, বেতন কম পাওয়া, খাবারের অভাব, এমনকি মারধরের মতো পরিস্থিতি সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে। একই অভিজ্ঞতা ফরিদপুরের শাহিদা বেগমের। তিনি বলেন, বেতন কেটে নেওয়া, খাবারের কষ্ট, এবং শারীরিক আঘাত তাঁদের জীবনে তিক্ত অভিজ্ঞতা হিসেবে থেকে গেছে।
নারীদের বিদেশগমনে উৎসাহ কমার কারণ
বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বায়রার মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী জানান, প্রশিক্ষণের মেয়াদ এক মাস থেকে দুই মাসে বৃদ্ধি এবং গৃহকর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রচার নারীদের বিদেশে যাওয়ার আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া সৌদি আরবের নিয়োগকর্তারাও এখন আফ্রিকার দেশগুলো থেকে কর্মী নিচ্ছেন।
মধ্যপ্রাচ্যে নারীদের কর্মসংস্থানের সংকট
২০২৪ সালে ৫৬টি দেশে নারী কর্মী গেলেও বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্যের পাঁচটি দেশে সীমাবদ্ধ। সৌদি আরবের ৬৬ শতাংশ নারী কর্মী গেলেও তাদের অনেকেই নির্যাতনের মুখে দেশে ফিরেছেন।
সমাধানের দিকে দৃষ্টি
ব্র্যাক এবং অন্যান্য সংস্থার মতে, নারী কর্মীদের জন্য গৃহকর্মীর বাইরে অন্যান্য খাতে কাজের সুযোগ তৈরি করা জরুরি। পাশাপাশি, বিদেশ যাওয়ার আগে প্রকৃত তথ্য জানানো এবং মানসিক প্রস্তুতি দেওয়ার উপর জোর দিতে হবে।
নারী কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে সঠিক নীতিমালা এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা না হলে এই সংকট আরও বাড়তে পারে।