close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

下一个

ছাত্র রাজনীতি থেকে জেলা নেতৃত্বে—এক সংগ্রামী রাজনীতিকের যাত্রা

16 意见· 22/10/25
Juwel Hossain
Juwel Hossain
37 订户
37
政治

সিরাজগঞ্জ জেলার রাজনীতিতে বিএনপির এক দৃঢ় স্তম্ভের নাম সাইদুর রহমান বাচ্চু। দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক সংগ্রাম, ত্যাগ ও মাঠপর্যায়ের নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে তিনি আজ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসে জেলা রাজনীতিতে নিজস্ব অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি, যা আজ অনেক তরুণ নেতার জন্য প্রেরণার উৎস।

সাইদুর রহমান বাচ্চু জন্মগ্রহণ করেন সিরাজগঞ্জ শহরের এক মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে। তাঁর পিতা আবুল হোসেন ছিলেন সাধারণ ব্যবসায়ী। শৈশবে পিতার মৃত্যু তাঁকে জীবনের বাস্তবতার মুখোমুখি করে তোলে। জ্ঞানদায়িনী হাই স্কুল থেকে শিক্ষা জীবন শুরু করলেও, কৈশোরে রাজনৈতিক প্রেরণাই তাঁকে ছাত্র রাজনীতির দিকে টেনে নেয়।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে, প্রায় ১৯৭৯ সালে, তিনি ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৮৩-৮৪ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে একাধিকবার গ্রেফতার হন। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময় রাজনৈতিক মামলায় আটক থাকায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি—কিন্তু তাতে তাঁর মনোবল ভাঙেনি।

১৯৮৮-৮৯ এবং ১৯৮৯-৯০ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন। একই সময়ে ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে তিনি সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেন।

১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় তিনি জেলা বিএনপির তৎকালীন নেতৃত্বের সঙ্গে সমন্বয় করে “বন্যার্ত তহবিল” গঠন করেন এবং ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এই মানবিক উদ্যোগই তাঁকে মানুষের কাছে “সংগ্রামী নেতা” হিসেবে পরিচিত করে তোলে।

পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে ২০২৪ সালের বন্যাতেও তিনি মাঠে ছিলেন ত্রাণ ও সহায়তা কার্যক্রমে। ছাত্র আন্দোলনের “শহীদ ১০” পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে তিনি আবারও জনমানুষের আস্থা অর্জন করেন।

২০০৩ সালে তিনি মূল দল বিএনপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হন এবং একই বছর শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তৃণমূল পর্যায়ে তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা ও দুঃসময়েও নেতাকর্মীদের পাশে থাকার মনোভাব তাঁকে জেলা রাজনীতির কেন্দ্রে নিয়ে আসে।

২০০৯ সালের পর থেকে বিএনপির বিভিন্ন আন্দোলন, মিছিল ও সভা-সমাবেশে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ২০১৬ সালে তাঁকে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিরও সদস্য।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সাইদুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে প্রায় ৬৮টি মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদসূত্রে জানা যায়। আন্দোলনের সময় তাঁকে বহুবার গ্রেফতার ও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনী সময় তাঁর কিছু বক্তব্যই নেতাকর্মীদের উজ্জ্বিত করে রেখেছে। তিনি বলেছিলেন— “আমাদের কর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে, কিন্তু আমরা পিছু হটব না। ভোটাধিকার আদায়ের লড়াই থেকে বিএনপি কখনোই সরে দাঁড়াবে না।”

তবে রাজনৈতিক জীবন শুধুই সংগ্রামে পূর্ণ নয়; বিতর্কও তাঁকে ছাড়েনি। ২০২০ সালে এক বনভোজনে অংশ নেওয়ায় তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। তবু তিনি বলেন— “দলীয় শৃঙ্খলা আমার কাছে সর্বাগ্রে। মতবিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু দলের ঐক্যই আমার অঙ্গীকার।”

রাজনীতিতে নিজের অবস্থান নিয়ে সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন— “আমি রাজনীতি করি জনগণের অধিকারের জন্য। আমাদের দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারই আমার জীবনের লক্ষ্য। জনগণের শক্তিতেই বিএনপি টিকে আছে, জনগণের জন্যই আমরা সংগ্রাম করছি।”

সিরাজগঞ্জের তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীরা তাঁকে “বাচ্চু ভাই” নামে চেনেন। সহজ-সরল জীবনযাপন, সবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও সংগঠনপ্রেম তাঁকে করেছে জনপ্রিয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, “সিরাজগঞ্জ বিএনপি’কে টিকিয়ে রাখার পেছনে সাইদুর রহমান বাচ্চুর ভূমিকা মৌলিক। সংঘাতময় রাজনীতির মধ্যেও তিনি সংগঠন ধরে রেখেছেন।”

দলীয় পুনর্গঠন এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি আরও সুসংগঠিত বিএনপি গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেন “আমার লক্ষ্য পরিষ্কার— সংগঠনের ঐক্য, তৃণমূলের ক্ষমতায়ন এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার। রাজনীতি মানে ক্ষমতা নয়, জনগণের বিশ্বাস।”

একজন সংগ্রামী রাজনীতিবিদ, সংগঠক ও সামাজিক কর্মী হিসেবে সাইদুর রহমান বাচ্চু আজ সিরাজগঞ্জ রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ত্যাগ, সাহস ও নীতির মিশেলে গড়া তাঁর রাজনৈতিক জীবন কেবল জেলা নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয় বিশ্লেষকরা।


#sydurrahmanbachchu | #bnp | #sirajganj

显示更多

 0 注释 sort   排序方式


下一个