লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
ভেঙে গেছে শঙ্খ নদীর পাড়, হু হু করে ঢুকছে পানি
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি ও বঙ্গোপসাগরে জোয়ারের পানিতে জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের শঙ্খ নদীর পাড় ভেঙে তীরবর্তী এলাকায় পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিতে কৃষি জমির ফসল ও ওই এলাকার মৎস্য ঘের পানিতে ডুবে গেছে।
বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মুষলধারে ভারি বৃষ্টিপাত ও বঙ্গোপসাগরের বৃদ্ধি পাওয়া জোয়ারের পানিতে ভেঙে গেছে শঙ্খ নদীর পাড়। শঙ্খ নদীর পানি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় তীর উপচে লোকালয়ে ঢোকা শুরু করেছে।
স্থানীয়রা জানান, বেড়েছে জোয়ারের পানির উচ্চতা। ফলে স্বাভাবিক সময়েই জীর্ণ, শঙ্খ নদীর পাড়ের বাঁধ ভেঙে এবং উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ছে। ফলে উপজেলার জুঁইদন্ডী বিস্তীর্ণ এলাকায় হুমকিতে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাছের ঘের, কৃষকদের ফসলও।
স্থানীয় জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোরশেদুর রহমান খোকা জানান, জুইঁদন্ডী ইউনিয়নের ৮ কিলোমিটার বাঁধ এখনও অরক্ষিত। বর্ষার আগে ঝুঁকিপূর্ণ শঙ্খ নদীর পাড় মেরামত না করায় পানি ঢুকছে লোকালয়ে। পানিতে তলিয়ে গেছে মাছের ঘেরের মাছ ও ক্ষতি হয়েছে বেশি কৃষকদের। দ্রুত মেরামত না করলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইউনিয়নের ১ হাজার পরিবারের।
অন্যদিকে ভাঙন তীব্র হচ্ছে পারকি সমুদ্র সৈকতে:
বেশ কয়েক বছর ধরে পারকি সমুদ্র সৈকত ভাঙছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে ভাঙন আরও বেড়েছে। এ কারণে পর্যটকদের জন্য সৈকত যেমন অনিরাপদ হয়ে উঠেছে, তেমনই লুসাই পার্কসহ বিভিন্ন স্থাপনাও ঝুঁকিতে পড়েছে।
ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে সৈকতের এমন ভাঙন বাড়তেই থাকবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙান রোধে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপের দাবী জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, ব্যবসায়ী ও মাছের ঘেরের মালিকদের নিজস্ব অর্থয়ানে মাটি ও জিওব্যাগ ভর্তি বসানো বালুর বাঁধও টেকসই হচ্ছে না সৈকতে। পানির ধাক্কায় কিছুদিনপরই পানিতে তলিয়ে যায়। পারকি সমুদ্র সৈকত রক্ষায় স্থানীয়ভাবে পাথরের বক্ল বসানো দরকার।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে পারকি সৈকতে দেখা যায়, প্রবল জোয়ারের ধাক্কায় চট্টগ্রামের পারকি সমুদ্র সৈকতের ভাঙন দেখা দিয়েছে। জলোচ্ছ্বাসের কাছে পারকি যেমন উন্মুক্ত হয়ে পড়ছে, তেমনি হুমকির মধ্যে পড়েছে সম্ভাবনাময় এই সৈকত। সৈকতের লুসাই পার্ক এলাকা থেকে আধা কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ঝাউগাছের গোড়ার বালু সরে দেড় থেকে দুই ফুট বালু সরে যাওয়ায় গাছগুলোর শেকড় বেরিয়ে পড়েছে। এসব ভাঙন ঠেকাতে নিজ উদ্যোগে মাছের ঘেরের মাটি কেটে অস্থায়ী বাঁধ দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
লুসাই পার্কের স্বত্বাধিকারী মো. হাশিম চৌধুরী বলেন, ‘গত কয়েকদিনের টানা বাঁধের ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে আামদের নিজেদের অর্থয়ানে বিভিন্ন অংশে কাজ করা হচ্ছে। পারকি সমুদ্র সৈকত রক্ষায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের দাবী করছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, ‘নতুন করে উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য ৩০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। যেটি বাস্তবায়ন করছেন বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী। জুঁইদন্ডীর শঙ্খ নদীর পাড় ভাঙনের বিষয়টি নৌ-বাহিনীকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। পানি নামলে মেরামত কাজ করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন প্রকল্পের পরিচালক।’
পারকি সমুদ্র সৈকতের ভাঙনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র পারকি সমুদ্র সৈকত রক্ষায় আমরা নতুন একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। এটি বাস্তবায়ন হলে পাল্টে যাবে পারকি সমুদ্র সৈকতের চিত্র।