আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২৩/১২/২০২৪ ১১:০৯এ এম
ঢাকার বাতাস ভয়ংকর দূষিত: সতর্কতায় করণীয় ও বাঁচার উপায়
ঢাকার বাতাসে বিপদসংকেত
ঢাকার বায়ুদূষণ এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বায়ুদূষণ সূচক (আইকিউএয়ার) অনুযায়ী, বায়ুর মান স্কোর ৩০০-এর ওপরে গেলে তা দুর্যোগপূর্ণ বিবেচিত হয়। চলতি মাসেই একাধিকবার ঢাকার বায়ুর মান ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে এই স্কোর ছিল ২৯২, যা ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। তবে গতকাল রাত ১১টা থেকে আজ সকাল ৭টা পর্যন্ত ঢাকার স্কোর ছিল ৩০০-এর ওপরে।
টানা দূষণের রেকর্ড
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার জানান, গতকাল রাত ১২টার দিকে ঢাকার বায়ুমান সূচক ৪৫৫-এ পৌঁছায়। এই মাত্রা টানা আট ঘণ্টা ৩০০-এর ওপরে ছিল। এটি ঢাকার বায়ুদূষণের ভয়াবহ চিত্রকে সামনে তুলে ধরে।
বিশ্বব্যাপী দূষণ পরিস্থিতি
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণ করে। আজকের তথ্য অনুযায়ী, ৩১৬ স্কোর নিয়ে বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত শহর ভারতের দিল্লি। যদিও ঢাকার গড় বায়ুমান ৩০০-এর নিচে থাকলেও নগরীর শীর্ষ দূষিত দশটি স্থানের মধ্যে ছয়টিতে স্কোর ৩০০ ছাড়িয়েছে।
ঢাকার প্রধান দূষিত স্থানগুলো হলো:
গুলশান লেক পার্ক: স্কোর ৩৮৫
গুলশান-২ রব ভবন: স্কোর ৩৬৯
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস: স্কোর ৩৪৬
প্রধান দূষণ উপাদান
ঢাকার বায়ুর প্রধান দূষণ উপাদান হলো ‘পিএম ২.৫’ নামে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা। আজ এই উপাদানের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে ৪৩.৫ গুণ বেশি। এই দূষণ যেকোনো মানুষের জন্যই মারাত্মক ক্ষতিকর।
সতর্কতায় করণীয়
এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য রক্ষা করতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। আইকিউএয়ারের পরামর্শ অনুযায়ী:
ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
খোলা স্থানে ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন।
ঘরের জানালা বন্ধ রাখুন।
দূষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয়
ঢাকার বায়ুদূষণ কমাতে জরুরি ভিত্তিতে তিনটি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
নগরীতে যেকোনো ধরনের বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ করতে হবে।
নির্মাণকাজের সময় প্রয়োজনীয় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
দূষণকারী যানবাহনের চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে।
শেষ কথা
বায়ুদূষণ একটি নীরব ঘাতক। ঢাকার বাতাসের বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে। তাই নাগরিকদের পাশাপাশি প্রশাসনেরও এই বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। নিজের ও পরিবারের সুরক্ষায় এখনই সতর্ক হোন।