আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ০৫/০২/২০২৫ ০১:৪১পি এম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মৃত্যু: পরিবারের প্রিয়জনের লাশ খুঁজতে কতটা ভোগান্তি?
৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে নিহত আবুল হোসেনের লাশ পাওয়ার জন্য তার স্ত্রী লাকী আক্তারের বছরের পর বছর খোঁজার চিত্র সত্যিই বেদনাদায়ক। হলুদ জার্সি ও লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় ঘর থেকে বের হওয়া আবুল হোসেনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভ্যানে তোলা হয়েছিল। এরপর থেকেই তার স্ত্রী লাকী আক্তার দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, মর্গ ও কারাগার সহ প্রতিটি স্থানে আবুলের খোঁজ চালিয়েছেন। প্রায় ২৫ দিন পর এক ভিডিওতে আবুলের লাশ একটি ভ্যানে স্তূপীকৃত অবস্থায় দেখা যায়, যেখানে তার হলুদ জার্সি পরিহিত শরীর চিনতে পেরে তিনি নিশ্চিত হন। তবে, লাশ পাওয়ার পরেও আবুল হোসেনের নাম শহীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি, এমনকি কোনো অনুদানও পাননি তার পরিবার।
লাকী আক্তার জানান, আবুল হোসেনের লাশ পাওয়ার পরেও তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ মেনে নেওয়া হয়নি, শুধু মৃত্যুর সনদে "হত্যা" লেখা রয়েছে। এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে 'গণ-অভ্যুত্থানসংক্রান্ত বিশেষ সেল' গঠন করা হলেও নিখোঁজ ও বেওয়ারিশ লাশের তালিকা এখনও পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ হয়নি। আশুলিয়ার খোঁজে লাকী আক্তার অবশেষে আবুল হোসেনের লাশ শনাক্ত করেন, কিন্তু তাও ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এই ধরনের বহু পরিবারের জন্য এই ভোগান্তি শেষ হচ্ছে না। একই রকম অবস্থায় রয়েছে হাসান ও হৃদয়ের পরিবারও। হাসান, যিনি ৫ আগস্টের পর থেকে নিখোঁজ, তার পরিবারের খোঁজের কষ্টও কোনো শেষ পাচ্ছে না। আবার, হৃদয়ের লাশও তাঁর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছে, যদিও গাজীপুরে পুলিশ তার পিঠে বন্দুক ঠেকিয়ে হত্যার দৃশ্য ভিডিওতে ধরা পড়েছিল।
তবে, এই পরিস্থিতি কেবল এক পরিবারের কাহিনী নয়। বাংলাদেশের অসংখ্য পরিবার এখনও খুঁজে চলেছে তাদের প্রিয়জনদের লাশ। যাদের নাম ভুলে গেছে ইতিহাস, অথবা যাদের হারিয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা এখনও নষ্ট হয়নি।