আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২১/০১/২০২৫ ০৫:৫৮পি এম
উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে নতুন অধ্যাদেশ: জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা
বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় একটি নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে। সরকার একটি নতুন অধ্যাদেশ জারি করেছে, যা উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য একটি জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া হবে আরও স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের জন্য একটি ছয় সদস্যবিশিষ্ট কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। এই কাউন্সিল সদস্যরা নিজেরাই নাম সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করবেন। তাছাড়া, অন্য কেউও প্রস্তাবিত নাম নিয়ে কাউন্সিলে চিঠি পাঠাতে পারবেন। এতে বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে একেবারে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ, যা জনগণের আস্থা অর্জন করবে।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘‘পূর্ববর্তী সরকারের আমলে, অনেক সময়ই রাজনৈতিক বিবেচনায় অযোগ্যদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যার ফলে উচ্চ আদালত হয়ে উঠেছিল দুর্নীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বড় প্ল্যাটফর্ম। এসব কারণে মানুষ তার ন্যায্য অধিকার পেতে ব্যর্থ হয়েছিল।’’
তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, এখন থেকে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে দলীয় বিবেচনা মুক্ত, যেখানে যোগ্য, দক্ষ এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাই বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাবেন। এতে ১৭ কোটি মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে এবং দেশের বিচারব্যবস্থা হয়ে উঠবে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর।
আসিফ নজরুল আরও জানান, ‘‘এই আইনটি তৈরি করা হয়েছে দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে, যাতে নিরপেক্ষ এবং যোগ্য ব্যক্তিরা বিচারকের পদে নিয়োগ পায়। এটি একটি ইতিহাস সৃষ্টি করবে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায়।’’
এছাড়াও, তিনি সুপ্রিম কোর্টের পৃথক সচিবালয় গঠনের কথাও উল্লেখ করেন এবং জানান, বর্তমানে এ বিষয়ে কাজ চলছে। এর পাশাপাশি, স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস তৈরির জন্য আইন প্রণয়নের কাজও চলমান রয়েছে।
এভাবে, বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ার এই নতুন অধ্যাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা দেশের বিচারব্যবস্থা এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে।