সরকারের বাস্তবতা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে: নুরুল হক নুর
গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর বলেছেন, "বিএনপি মাঠের বাস্তবতা বুঝে এই সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।" একটি ইউটিউব সাক্ষাৎকারে তিনি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং সম্ভাব্য সংস্কার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
নুরুল হক নুর বলেন, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো যেমন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি, তাদের মধ্যে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট। তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকা যাবে না এমন প্রস্তাবে সম্মতি প্রকাশ করেছে। এছাড়া, সংসদ সদস্য হওয়ার বয়সসীমা ২৫ থেকে ২১ বছরে নামানোর প্রস্তাবও তাদের তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্ব বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মত দেন তিনি।
নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে নুর বলেন, "৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব বাস্তবায়ন করা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে এখনও চ্যালেঞ্জিং। আমরা নারীর ক্ষমতায়ন চাই, তবে সমাজের বাস্তবতা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।"
নুরুল হক নুর সংসদীয় ব্যবস্থার সংস্কারের ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, "সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে চার বছরে আনার প্রস্তাবটি অত্যন্ত ইতিবাচক। এতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠনের প্রস্তাবও গুরুত্বপূর্ণ, যা আনুপাতিক নির্বাচনের মাধ্যমে উচ্চকক্ষে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।"
তিনি আরও বলেন, "বর্তমান সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন দ্রুত সম্পন্ন করা জরুরি। এতে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।" তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, "বিতর্কিত নির্বাচন দেশের জন্য ক্ষতিকর। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজনীয় সংস্কার সময়মতো করতে হবে।"
নুরুল হক নুরের বক্তব্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক ঐক্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের কাঠামোগত পরিবর্তন এবং ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা এখন সময়ের দাবি। "এই সরকার যদি জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে, তবে তা ভবিষ্যৎ সরকারের জন্য ইতিবাচক উদাহরণ হয়ে থাকবে," বলেন তিনি।
এই সাক্ষাৎকারে নুরুল হক নুর দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট, দুর্নীতি, এবং প্রশাসনিক দলীয়করণের সমালোচনা করে বলেন, "গত ১৬ বছরের অর্থনৈতিক সংকট এই সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ। তবে সুশাসন নিশ্চিত করা এবং দুর্নীতি রোধ করা ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণের কোনো বিকল্প নেই।