আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২১/১২/২০২৪ ১০:১৬এ এম
হজ কোটা ১০০০! এজেন্সি মালিকদের আশঙ্কা বিশৃঙ্খলার, দাবি দ্রুত সমাধানের
হজ ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন: ন্যূনতম কোটা ১০০০, এজেন্সি মালিকদের উদ্বেগ চরমে
আগামী বছরের পবিত্র হজ ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন এনেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এবার এজেন্সি প্রতি সর্বনিম্ন ১,০০০ হজযাত্রী নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় চার গুণ বেশি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। তবে এত বেশি সংখ্যক হজযাত্রী একত্র করতে হিমশিম খাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে এজেন্সি মালিকরা। তারা বলছেন, এর ফলে হজ কার্যক্রমে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।
এজেন্সিগুলোর দাবি: কোটা ১০০-তে নামিয়ে আনা হোক
বৈষম্যবিরোধী হজ এজেন্সি মালিকদের আহ্বায়ক আখতার উজ্জামান জানান, ন্যূনতম কোটা ১,০০০ নির্ধারণ করা হজনীতি বিরোধী। তিনি বলেন, "জাতীয় হজনীতিতে এজেন্সি প্রতি ১০০ থেকে ৩০০ হজযাত্রী নির্ধারণের কথা বলা আছে। এর বেশি হলে হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা অনিবার্য হয়ে উঠবে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত বছর আড়াইশ' হজযাত্রী নিয়ে কাজ করতেই অনেক এজেন্সি হিমশিম খেয়েছে। এবার যদি ১,০০০ হজযাত্রী বাধ্যতামূলক করা হয়, তাহলে বেশিরভাগ এজেন্সি তা পরিচালনা করতে পারবে না।
হজযাত্রী সংখ্যা ও কোটা পূরণের চ্যালেঞ্জ
গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশের জন্য এবার সৌদি সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ১,২৭,১৯৮ জনের হজ কোটা। তবে আগের বছর কোটা পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ বছরও এজেন্সিগুলো কোটা পূরণ নিয়ে চিন্তিত। এখন পর্যন্ত মাত্র ৭৫,০০০ জন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। নিবন্ধনের শেষ সময় ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন হজযাত্রী বাড়লেও, কোটা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যা হবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
লিড এজেন্সির ধারণা নিয়ে জটিলতা
হজযাত্রীদের কোটা পূরণে ধর্ম মন্ত্রণালয় লিড এজেন্সি নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছে। এজেন্সিগুলোকে একত্রিত করে হজযাত্রী সংখ্যা ১,০০০-এ পৌঁছানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে এ ব্যবস্থায় চরম বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন এজেন্সি মালিকরা।
হাবের (হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সাবেক সহসভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার বলেন, "একটি লিড এজেন্সির অধীনে এতগুলো এজেন্সি একত্র করা মানে ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। এ কারণে কোটা কমানোর বিষয়টি সরকারকে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।"
তাদের দাবি: কোটা আগের মতো আড়াইশ’ রাখা হোক
মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, "বর্তমানে বেশিরভাগ এজেন্সির অধীনে মাত্র ৪০-৫০ জন হজযাত্রী রয়েছে। একশ' হজযাত্রী আছে এমন এজেন্সির সংখ্যাও খুব কম। ফলে এক হাজারের বাধ্যবাধকতা মানা সম্ভব নয়। সরকারের উচিত ন্যূনতম কোটা ১০০ অথবা আগের বছরের মতো আড়াইশ’ নির্ধারণ করা।"
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আহ্বান
হজ এজেন্সি মালিকরা মনে করেন, যদি এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা না হয়, তবে হজ কার্যক্রমে অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে। এ বিষয়ে সৌদি সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান চেয়ে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
হজযাত্রী ও এজেন্সি মালিকদের উদ্বেগ দূর করতে সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপই এখন সবচেয়ে জরুরি।