আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২১/১২/২০২৪ ১০:০৯এ এম
শহীদদের বিচারহীনতার দায় সরকারের ব্যর্থতার চূড়ান্ত প্রতীক: সারজিস আলম
সরকারের ব্যর্থতার অন্যতম মাপকাঠি হিসেবে দাঁড়িয়েছে জুলাই গণআন্দোলনে শহীদদের হত্যাকারীদের বিচারের অক্ষমতা। গত ১৬ বছরে আমরা স্বৈরাচারী একটি ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছি, যা জাতির জন্য একটি বড় দায়। এমন মন্তব্য করেছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।
শুক্রবার সকালে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, "জুলাই ও আগস্ট বিপ্লবে পুলিশ নিজেদের কর্মকাণ্ডের কারণে ইমেজ সংকটে পড়েছে। তাদের উচিত সুনামের সঙ্গে কাজ করে সেই ইমেজ পুনরুদ্ধার করা। আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের হত্যার বিচার করতে হবে।"
পুলিশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
সারজিস আলম আরও বলেন, "পুলিশ চাইলে অনেক কিছু সম্ভব। মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অস্থায়ীভাবে সহযোগিতা দিতে আসলেও মাঠপর্যায়ের নিয়ন্ত্রণ পুলিশকেই করতে হয়। আমাদের প্রত্যাশা বেশি, কারণ আমরা এখনো পুলিশের প্রতি আস্থা হারাইনি। তবে সেই আস্থা বজায় রাখা পুলিশকেই প্রমাণ করতে হবে।"
তিনি শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, "প্রত্যেক জেলার প্রশাসন ও পুলিশের সমন্বয়ে শহীদ পরিবারদের সহায়তা প্রদান করা সম্ভব। তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা গেলে দায়িত্ব পালন সহজ হয়ে যায়। আমরা আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, তাদের পাশে থাকুন এবং তাদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করুন।"
শহীদদের প্রতি অঙ্গীকার
সারজিস আলম প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, "আমরা আপনাদের কথা দিতে চাই যে, জীবন দিয়ে হলেও এই অভ্যুত্থানের চেতনাকে রক্ষা করব।"
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি মো. হাসানুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. তারিকুল ইসলাম এবং আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। পরে, ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ৫৮ শহীদ পরিবারের প্রতিটি পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে মোট ২ কোটি ৯০ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে শহীদ পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।