শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
Verified আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ১৭/০৯/২০২৪ ০২:০১পি এম

মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, স্থানীয়দের দুর্ভোগ

মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, স্থানীয়দের দুর্ভোগ
রায়পুর-লক্ষ্মীপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বর্ডারবাজার এলাকায় বছরের পর বছর ধরে বর্জ্য ফেলে আসছেন রায়পুর পৌরসভাসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এতে করে পথচারী, যানবাহনের যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলে এলেও পৌরসভা ও বাজার কমিটি কর্তৃপক্ষ সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে, আবর্জনার কারণে ডাকাতিয়া নদীর সংযোগ চরপাতা ইউপির খালের পানি প্রবাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিষাক্ত পানি আটকে গিয়ে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে আর শুষ্ক মৌসুমে দুর্গন্ধ প্রকট হয়ে উঠছে। গ্রামবাসী অভিযোগ দিলেও আবর্জনার ভাগাড় নিয়ে সুষ্ঠু কোনো সমাধান হয়নি।

গত রোববার সরেজমিন দেখা যায়, খালের পাশে মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে আবর্জনার স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন সকালে পৌরসভার দুই কর্মচারী তাদের ময়লার গাড়ি নিয়ে এসে সহযোগীদের মাধ্যমে বর্জ্য ফেলছেন।

তারা জানান, প্রতিদিন পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে আনা বর্জ্য এখানে ফেলা হয়। এছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট ও কারখানার বর্জ্যগুলোও এখানে ফেলছেন।


বর্ডারবাজারের কাঁচামাল বিক্রেতা খলিলুর রহমান জানান, আবর্জনার দুর্গন্ধে বাজারে বসে থাকা যায় না। ক্রেতা-বিক্রেতা সবারই দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠেছে এ ময়লার ভাগাড়। বর্জ্য ফেলার স্থান থেকে আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মানুষকে নাকে-মুখে রুমাল চেপে চলতে হয়।

রায়পুর নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হোসেন আহাম্মদ বলেন, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মহাসড়কের পাশে বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ না করার বিষয়ে পৌরবাসী অনেকদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন। পৌরসভার বয়স দেড় যুগেরও বেশি। এ সময়েও জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পরিবেশ দূষণের শিকার হতে হয়, যা দুঃখজনক।

চরপাতা বর্ডারবাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিন পাটোয়ারী বলেন, এ বাজারে প্রায় ২০০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দুই বছর ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদসহ সাবেক চারজন মেয়রের নির্দেশনাতেই রায়পুর পৌর কর্তৃপক্ষ সব ময়লা এনে এখানে ফেলছে। আর যেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে সে স্থানটি চাঁদপুর থেকে রায়পুর ও লক্ষ্মীপুরে প্রবেশদ্বার। এর আশপাশে একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলার প্রতিবাদে বছরে কয়েকবার স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদ জানালেও কোনো সুফল মিলছে না।

চট্টগ্রাম-রায়পুর-চাঁদপুর সড়কে চলাচলকারী শাহি পরিবহণের চালক সাকিল হোসেন ও আক্তার হোসেন বলেন, চাঁদপুর থেকে ফেরার পথে দেখা যায় সড়কের ওপর অনেক সময় ময়লা পড়ে থাকে। বর্ডারবাজার এলাকায় সড়কের ফুটপাত ময়লার দখলে থাকে। দুর্গন্ধে বাসযাত্রীদের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়।

লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, রায়পুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বিনা অনুমতিতে মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। এতে ভীষণ বেকায়দায় পড়েছি। সড়কের একটা অংশে ময়লা ফেলায় যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীদের জানিয়েছি। জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বিষয়টি একাধিকবার উত্থাপন করা হয়েছে। সামনের সমন্বয় সভাতেও এ বিষয়টি তোলা হবে। এই সমস্যা সমাধানে পৌর কর্তৃপক্ষ একাধিকবার আশ্বাস দিলেও সুফল মেলেনি।

রায়পুর পৌরসভার সচিব আবদুল কাদের জানান, ময়লা ফেলার জন্য পৌরসভার কোনো জায়গা নেই। অনেক খোঁজ করে অবশেষে বর্ডারবাজারে খালের পাশে পরিত্যক্ত স্থানে সাবেক মেয়রদের নির্দেশনাতে জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এখন প্রশাসক হিসেবে এডিসি স্যার বিষয়টি দেখবেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ