সড়কে ৫১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি
দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, গত ২০০৯-১০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীনে বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্পে ২৯ হাজার ২৩০ কোটি থেকে ৫০ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।
বুধবার সকালে ধানমন্ডিতে সংস্থাটির নিজস্ব কার্যালয়ে ‘সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক একটি গবেষণার ফলাফল উপস্থাপনের সময় এ তথ্য জানানো হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, গত ১৪ বছরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীনে উন্নয়ন প্রকল্পে ২৩ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ প্রাপ্তি ও ঠিকাদারের বিল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ঘুষের পরিমাণ ১১ থেকে ১৪ শতাংশ। এ ছাড়াও নির্মাণ কাজে রাজনীতিবিদ, ঠিকাদার এবং উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ত্রিপক্ষীয় আঁতাতের মাধ্যমে দুর্নীতির হার ১০ থেকে ২০ শতাংশ বলে উঠে এসেছে। স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক চাঁদাবাজি এবং দরপত্র সংক্রান্ত দুর্নীতির হার ছিল ২ থেকে ৬ শতাংশ।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পগুলো অতি উচ্চ ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে, কিন্তু নিম্নমানের কাজের ফলে সড়ক ও সেতুগুলো টেকসই হচ্ছে না। এর ফলে জাতীয় সম্পদের অপচয় ও অপব্যবহার বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, সড়ক ও মহাসড়ক খাতে রাজনীতিবিদ, আমলা ও ঠিকাদারদের ত্রিপক্ষীয় যোগসাজশের মাধ্যমে প্রকল্পগুলো পরিচালিত হচ্ছে। এ খাতে দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে, যেখানে কিছু দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ ও ঠিকাদার বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছেন।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে যে, পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়ায় সওজের কিছু কর্মকর্তা ঘুষের মাধ্যমে দ্রুত প্রস্তাব পাশ করাচ্ছেন। এছাড়াও, প্রকল্প প্রণয়নের সময় অতিরিক্ত বাজেট প্রাক্কলন করা হয়েছে, যেখানে কখনো কখনো প্রকল্পের প্রাক্কলিত বাজেটের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে।