চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের একটি কারখানা থেকে বিলাসবহুল অন্তত ১৪টি গাড়ি বিএনপি নেতাদের তত্ত্বাবধানে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নগরীর কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্জারটেক এলাকার ওই কারখানা থেকে এসব গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়। সরকারের তরফ থেকে এস আলমের সম্পদ না কেনার এবং তাতে হাত না দেওয়ার ঘোষণা আসার পর এই ধরনের অস্থাবর সম্পদ সরানোর ঘটনা ঘটে।

গাড়ি সরানোর সময় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্মসম্পাদক এনামুল হক এনাম, কর্ণফুলী থানা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিয়া ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়িচালকসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, রাতের আঁধারে কারখানা থেকে একের পর এক কয়েকটি গাড়ি বের হচ্ছে, এবং এনাম ও মামুনের উপস্থিতিও সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

কর্ণফুলী থানা এলাকার এক প্রত্যক্ষদর্শী যুগান্তরকে জানান, রাত ১টার পর মইজ্জারটেক এলাকায় অবস্থিত এস আলম কোল্ড রোল স্টিল কারখানার ভেতর থেকে গাড়িগুলো বের করা হয়। এর মধ্যে মার্সিডিজ ও বিএমডব্লিউ গাড়িও ছিল। গাড়িগুলো বের হওয়ার পর দ্রুত নতুন ব্রিজ পার হয়ে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার হয়ে চলে যায়। কয়েকজন এসব গাড়ির পিছু নিলেও দ্রুতগতির কারণে তারা বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। গাড়ি বের হওয়ার সময় তারা কারখানার সামনে এনাম, মামুন মিয়া এবং আবু সুফিয়ানের গাড়িচালক পিপলুকে দেখতে পান। ভিডিও ফুটেজেও তাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকায় মীর গ্রুপের একটি কারখানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ পান এবং সেখানেই যান। তিনি আরও দাবি করেন, ভিডিও ফুটেজটি মূলত কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকার, মইজ্জারটেকের এস আলম কারখানার নয়।

এদিকে, পটিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, ‘এনামুল হক এনামকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে বিপদে ফেলানোর চেষ্টা করছে।’ তিনি সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, তিন দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এস আলমের সম্পদ যাতে কেউ না কেনেন, দেশের স্বার্থে অন্য কেউ যাতে এই সম্পদে হাত না দেয়।’ এরপরই এস আলম গ্রুপের সম্পদ সরানোর বিষয়ে বিএনপি নেতাদের সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে।