ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আহত আরও ৬ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের ব্যাংককে নেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাদের পাঠানো হয়। আহতদের উন্নত মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এ পর্যন্ত ২২ জন আহতকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

সরকার আহতদের সুচিকিৎসায় বদ্ধপরিকর

জুলাই বিপ্লবে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকার চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সব ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে। দেশেই বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এনে উন্নত চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। যাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়া প্রয়োজন, তাদের দ্রুত বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় আজ আরও ছয়জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড পাঠানো হয়েছে।

কারা যাচ্ছেন থাইল্যান্ডে?

জানা গেছে, ছয়জনের মধ্যে তিনজন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এবং তিনজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। থাইল্যান্ডের ব্যাংকক হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হবে।

সিএমএইচ থেকে পাঠানো তিনজন:
১. মোহাম্মদ ইসরাফিল (১৫) - বাম হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তার হাতের নার্ভ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে এবং হাড় ভেঙে গেছে। তাকে মূলত রোবোটিক ফিজিওথেরাপির জন্য পাঠানো হয়েছে।
2. রোমান ঢালী (১৭) - পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্পাইনাল কর্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছেন। হাঁটাচলা করতে পারছেন না।
3. তাহসিন হোসেন (১৩) - তিনিও পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্পাইনাল কর্ড ইনজুরিতে ভুগছেন এবং স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছেন না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে পাঠানো তিনজন:

রাজিব (৩৬) - মাথায় গুলি লাগার পর অপারেশন করা হলেও অবস্থা উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

মিজানুর রহমান - মুখে গুলিবিদ্ধ হয়ে মুখমণ্ডলের আকার পরিবর্তিত হয়ে গেছে, যার জন্য অপারেশনের প্রয়োজন।

হাফিজুর রহমান হাবিব - পুলিশের গুলিতে স্পাইনাল কর্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়ায় তাকে রোবোটিক ফিজিওথেরাপির জন্য পাঠানো হয়েছে।

আগে আরও আহতদের পাঠানো হয়েছে বিদেশে

এদিকে, গতকাল চোখের চিকিৎসার জন্য ইমরান হোসেন ও মহিউদ্দিনকে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়। এর আগে চোখের চিকিৎসার জন্য আরও সাতজনকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে।

বিদায় অনুষ্ঠানে ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার প্রতিনিধি

আহতদের বিদায় জানাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ডাক্তার মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, সরকার আহতদের সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কাজ করছে এবং তাদের সুস্থ করে তোলাই সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার।

সমাপ্তি

আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, উন্নত চিকিৎসা ও রোবোটিক থেরাপির মাধ্যমে তারা দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।