ঢাকার সাতটি বড় সরকারি কলেজকে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদের সঙ্গে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের বৈঠকে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বৈঠক শেষে এক লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ভর্তি হবেন না। এই সিদ্ধান্ত শিক্ষাক্ষেত্রে বড় একটি পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বৈঠকে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তসমূহ:

১. সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্মানজনকভাবে পৃথক করা হবে।
২. ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম ঢাবির অধীন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৩. শিক্ষার্থীদের দাবির ভিত্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালনার সুপারিশ করবে।
৪. আসনসংখ্যা, ভর্তি ফি নির্ধারণসহ যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বিশেষজ্ঞ কমিটি।
৫. বর্তমানে ঢাবির অধীনে থাকা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে, তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

সংবাদ সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ দিক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ তাঁর লিখিত বক্তব্যে জানান, এই মুহূর্তে শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। তবে তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি এবং ধন্যবাদ জানিয়ে সম্মেলন শেষ করেন। উপাচার্যের সঙ্গে ছিলেন সহ-উপাচার্য মামুন আহমেদ, সায়মা হক বিদিশা এবং কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সাত কলেজের দীর্ঘদিনের সমস্যা:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সাত কলেজকে ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। তবে আট বছরেও সমস্যাগুলো কাটেনি। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন যে ঢাবির অধিভুক্তির ফলে শিক্ষাব্যবস্থায় জটিলতা বেড়েছে।

শিক্ষার্থীরা নিজেদের জন্য স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানিয়েছেন। তবে তাঁরা স্পষ্ট করেছেন, কোনোভাবেই তাঁরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফিরে যেতে চান না।

আগামীর পরিকল্পনা:

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন শিক্ষাব্যবস্থা কার্যকর করা হবে। ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে শিক্ষাক্রমের সব দিক নতুনভাবে সাজানো হবে। সরকারের পক্ষ থেকে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি এই পরিবর্তনের রূপরেখা নির্ধারণ করবে।

এই সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন আরও সহজ এবং কার্যকর করার লক্ষ্যেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।