বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম:
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২৭/০১/২০২৫ ১২:২১পি এম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের সংঘর্ষের জের: নীলক্ষেতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের সংঘর্ষের জের: নীলক্ষেতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও এর অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল থেকেই সাত প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়, এবং রিজার্ভে আরও পাঁচ প্লাটুন পুলিশ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সংঘর্ষের সূচনা

রোববার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ঢাবি প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে, শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে তিনি "দুর্ব্যবহার" করেছেন। এই ঘটনায় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যা ৬টার দিকে সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন। প্রো-ভিসিকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য রাত ১১টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন আন্দোলনকারীরা।

পরবর্তী সময়ে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্ষমা না চাওয়ায়, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা রাত ১১টার দিকে প্রো-ভিসির বাসভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন এবং মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে অগ্রসর হন। এ সময় ঢাবির শিক্ষার্থীরা মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে অবস্থান নেন।

সংঘর্ষ ও পুলিশের ভূমিকা

রাত ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকা কলেজের সামনে থেকে মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে পৌঁছায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে ঢাবির শিক্ষার্থীরা স্যার এ এফ রহমান হলের সামনে লাঠি হাতে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ঢিল ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। পরে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ

সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ঢাবির প্রো-ভিসি সাত কলেজের সমস্যা ও ভর্তি আসনসংখ্যা কমানোর বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। শিক্ষার্থীরা জানান, ২১ দিন আগে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হলেও সেটি পড়েননি প্রো-ভিসি। এমনকি তিনি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চেনেন না বলেও মন্তব্য করেন।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি

১. ২০২৪-২৫ সেশন থেকে সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে।
২. শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না।
৩. শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে।
৪. সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় নেগেটিভ মার্ক যুক্ত করতে হবে।
৫. ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির তত্ত্বাবধানে একটি পৃথক অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফির টাকা জমা রাখতে হবে।

পরিস্থিতি আপডেট

নীলক্ষেত মোড়ে এখনো অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত সংবাদ