আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২৭/০১/২০২৫ ১২:১৩পি এম
ট্রেন সংকটে দেশ: ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে বন্ধ হতে পারে ট্রেন চলাচল!
রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে অচলাবস্থার আশঙ্কা
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মধ্যরাত ১২টা থেকে বাংলাদেশ জুড়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা জটিলতা এখনও সমাধান না হওয়ায় এই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি।
রেলওয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, একজন চালক, সহকারী চালক, গার্ড, ও টিকিট চেকার বিশ্রামের সময় না পেয়ে অতিরিক্ত কাজ করলে ‘মাইলেজ’ নামে ভাতা দেওয়া হতো। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক নিয়ম অনুযায়ী মাইলেজ সুবিধা সীমিত করার সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন রানিং স্টাফরা।
১৬০ বছরের পুরনো নিয়মের পরিবর্তনে তীব্র ক্ষোভ
রানিং স্টাফদের দাবি, ১৬০ বছর ধরে মাইলেজ ভাতা মূল বেতনের সঙ্গে যোগ করেই পেনশন সুবিধা প্রদান করা হতো। কিন্তু ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় এই সুবিধা সীমিত করা হয়। এরপর থেকে এই সংকট ক্রমেই বেড়েছে। রেলওয়ে সমিতি অভিযোগ করেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত রেলওয়ে কোডের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে।
রানিং স্টাফদের মতে, কাজের চাপ তুলনামূলকভাবে দ্বিগুণ হলেও আর্থিক সুবিধা এবং পেনশন কাঠামোতে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এই সমস্যার সমাধানে গত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করে এলেও কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি।
আন্দোলন ও সরকারি প্রতিশ্রুতির ব্যর্থতা
এর আগে ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল কর্মবিরতির ফলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর রেলমন্ত্রী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তৎকালীন রেলওয়ের মহাপরিচালক রানিং স্টাফদের দাবির স্বপক্ষে একটি নির্দেশনাও দেন। কিন্তু ২০২৩ সালে অর্থ মন্ত্রণালয় আবারও আপত্তি জানালে সংকট আরও গভীর হয়।
রানিং স্টাফদের নেতা মো. মজিবুর রহমান জানিয়েছেন, তারা বারবার সময় দিয়েছেন, বারবার আন্দোলন স্থগিত করেছেন। এবার তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, দাবি পূরণ না হলে ২৮ জানুয়ারির প্রথম প্রহর থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অবস্থান
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা চাই তারা আন্দোলনে না যাক। তাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে।” তবে রানিং স্টাফরা দাবি করেছেন, শুধুমাত্র আলোচনা দিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, প্রয়োজন কার্যকর পদক্ষেপ।
জনজীবনে বড় ধরনের প্রভাব
রানিং স্টাফদের আন্দোলন সফল হলে দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে যেসব মানুষ প্রতিদিন ট্রেনের উপর নির্ভর করে চলাচল করেন, তাদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছাবে। এদিকে ট্রেন শিডিউল বজায় রাখতে একজন রানিং স্টাফকে দ্বিগুণ কাজ করতে হচ্ছে, যা তাদের মধ্যে হতাশা বাড়িয়েছে।