আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রকাশ ২৮/০১/২০২৫ ০৯:৩০পি এম
ছাত্র আন্দোলনের মুখে সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ: উত্তেজনা প্রশমনে বড় সিদ্ধান্ত!
ছাত্র আন্দোলনের চাপে এবার সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিলোসি ভুকেভিক পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন। দেশজুড়ে চলমান উত্তেজনা এবং বিক্ষোভের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। খবর ডয়চে ভেলের।
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ প্রসঙ্গে ভুকেভিক বলেন, "আমার আবেদন, সবাই আবেগ ত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ সংলাপে ফিরে আসুন।" তবে তার পদত্যাগ কার্যকর হতে সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন। নতুন সরকার গঠনের জন্য বা আগাম নির্বাচনের জন্য সাংবিধানিকভাবে ৩০ দিন সময় দেওয়া হবে।
উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে কঠিন সিদ্ধান্ত
বেলগ্রেডে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুকেভিক তার পদত্যাগকে "অপরিবর্তনীয় সিদ্ধান্ত" বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, "আজ সকালে সার্বিয়ার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আমার দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। আমরা সবকিছু নিয়ে আলোচনা করেছি এবং উত্তেজনা এড়াতে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
তবে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন না হওয়া পর্যন্ত তিনি এবং তার মন্ত্রীরা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।
নোভি সাদে ছাত্র বিক্ষোভে রক্তপাত
ভুকেভিকের ভাষণে উঠে এসেছে নোভি সাদে ছাত্র বিক্ষোভের প্রসঙ্গ। তিনি জানান, নোভি সাদের একটি বিক্ষোভে হামলার শিকার হয়ে এক ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়া, ট্রেন স্টেশনের ছাউনি ধসের ঘটনা নিয়ে বিরোধীরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নোভি সাদের মেয়র মিলান ডুরিকও তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
দুর্নীতি আর হতাহতের অভিযোগে উত্তাল সার্বিয়া
এর আগে, সোমবার রাজধানী বেলগ্রেডে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধ করেন ছাত্ররা। এতে কৃষকরাও যোগ দিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে অটোকোমান্ডা জংশন অচল হয়ে পড়ে, যা দেশের দৈনন্দিন কার্যক্রমে স্থবিরতা আনে।
ছাত্রদের অভিযোগ, গত ১৫ নভেম্বর নোভি সাদ শহরের একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জন নিহত হয়। এই নির্মাণকাজে দুর্নীতির জন্যই এ ঘটনা ঘটেছে। ক্ষুব্ধ জনগণ ন্যায়বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছাত্র আন্দোলনের প্রভাব
সার্বিয়ায় চলমান এই আন্দোলন বৈশ্বিক ছাত্র-অভ্যুত্থানের একটি ধারাবাহিক চিত্র। গত বছর বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছিলেন। একই সময়ে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বিদ্রোহীদের চাপে দেশ ছাড়েন। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের সামরিক শাসন জারির প্রচেষ্টায় ব্যাপক আন্দোলনের মুখে তিনি অভিশংসিত হন।
সার্বিয়ার ভবিষ্যৎ
সার্বিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ছাত্র আন্দোলন যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পরিবর্তনের প্রধান শক্তি হয়ে উঠছে, তা আবারও প্রমাণিত হলো।