সখিপুরে প্রবাসীর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ, তদন্তে পুলিশের গড়িমসি
শরীয়তপুরের সখিপুর থানাধীন ডিএমখালী ইউনিয়নে গরু দিয়ে ফসলি জমির কলই নষ্ট করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবাসীর স্ত্রী নাছিমা বেগমকে (৩০) মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রাজ্জাক সরকারের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ দায়েরের পর সখিপুর থানার তদন্ত কার্যক্রমে ‘গড়িমসি’অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ।
ঘটনার বিবরণ
ভুক্তভোগী নাছিমা বেগম অভিযোগ করেন, গত ১৯ জানুয়ারি সকালে বিবাদীদের গরু তার ফসলি জমির কলই নষ্ট করে। গরু সরানোর কথা বললে রাজ্জাক সরকার ও তার ছেলে রাজু সরকার তার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। তর্কের একপর্যায়ে তারা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং নিষেধ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করেন। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত লাগে।
তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে বিবাদীরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। আহত নাছিমাকে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অভিযোগ অনুসন্ধানে থানা কর্তৃপক্ষের গড়িমসি
নাছিমা বেগম অভিযোগ দায়ের করার ১২ঘণ্টার পেরিয়ে গেলেও থানার পক্ষ থেকে তদন্তে অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমি ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কিত।”
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাজ্জাক সরকার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। তিনি দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
চেয়ারম্যানের প্রতিক্রিয়া
ঘটনাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়ে জানানো হলে তিনি জানান, আমি এখনো ঘটনাটি জানি না। তবে আমি দ্রুত আমার চৌকিদার পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখব
পুলিশের বক্তব্য
সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, “অভিযোগের তদন্ত চলছে। এটি প্রক্রিয়াধীন এবং আমরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করছি। অভিযুক্তের রাজনৈতিক পরিচয় আমাদের কাজে প্রভাব ফেলবে না।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে মন্তব্য করেছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। প্রবাসীর স্ত্রীকে মারধরের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
ন্যায়বিচারের দাবি
ভুক্তভোগী নাছিমা বেগম বলেন, “আমি আমার স্বামী প্রবাসে থাকার কারণে জমিজমা দেখাশোনা করি। অথচ আওয়ামী লীগের পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে আমাকে মারধর করা হয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই এবং প্রশাসনের প্রতি আমার আস্থা রাখতে চাই।”
স্থানীয়দের আহ্বান
এলাকাবাসী সখিপুর থানার কাছে সুষ্ঠু ও দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, “প্রভাবশালী নেতাদের অন্যায় কর্মকাণ্ড রুখতে প্রশাসনের দৃঢ় অবস্থান প্রয়োজন। অন্যথায় সাধারণ মানুষ বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।”
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও এখন প্রশাসনের কার্যক্রমের দিকে তাকিয়ে আছে ভুক্তভোগী পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। ন্যায়বিচারের জন্য সবার দাবী একটাই—অপরাধী যেই হোক, কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।