ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
সিরিয়ার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কারাগার: সিদনায়া
সিরিয়ার সিদনায়া কারাগার, যা "মানব কসাইখানা" নামে পরিচিত, সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে এই গোপন কারাগারটি প্রথমবারের মতো বিশ্বের সামনে উন্মুক্ত হয়। দামেস্কের ৩০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এই কারাগারটি সিরিয়ার বর্তমান শাসক বাশার আল-আসাদের অধীনে থাকা সবচেয়ে নিষ্ঠুর কারাগারগুলোর মধ্যে একটি।
১৯৮৭ সালে নির্মিত এই কারাগারটি ছিল পুরোপুরি নিরাপত্তা দ্বারা সুরক্ষিত, যেখানে হাজার হাজার রাজবন্দী ও বিরোধীদের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হতে হয়েছে। এর ভিতরে অবস্থিত সেলগুলো এতটা ভয়ঙ্কর ছিল যে, বাইরের কেউ সেখানে ঢোকার সাহস পেত না।
সিদনায়া কারাগারে বন্দীদের উপর নানা ধরনের নির্যাতন চালানো হতো, যার মধ্যে ছিল শারীরিক নির্যাতন, মানসিক অত্যাচার এবং হত্যাকাণ্ড। অনেকেই দীর্ঘ বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন, তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তিকে ২০-৩০ বছর ধরে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এই কারাগারের একাধিক গেট ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল, যা নিশ্চিত করতো যে, কেউ পালাতে পারবে না। অন্ধকারে আচ্ছাদিত সেলগুলোতে বন্দীরা এমন অবস্থায় ছিলেন, যেখানে তারা বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে কিছুই জানতেন না।
সিরিয়ার বিপ্লবের পর, কিছু বন্দী তাদের প্রিয়জনদের খুঁজতে এখানে আসেন, কিন্তু অধিকাংশ সময়ই তারা নিঃসন্দেহে জানতেন না তাদের পরিবার সদস্যদের শেষ পরিণতি কী ছিল।
এছাড়া, সিদনায়া কারাগারের অন্যান্য গোপন ফ্লোর এবং গোপন রুমগুলোতে বন্দীদের উপর আরও ভয়ানক নির্যাতন চালানো হতো। এদের মধ্যে ছিল "হিউম্যান প্রেস" নামে একটি যন্ত্র, যা মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের মৃতদেহ থেঁতলে দেয়া হতো। এই সব অত্যাচারের জন্য এই কারাগারটি পৃথিবীজুড়ে পরিচিত হয়েছে, এবং এটিকে সিরিয়ার সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও কুখ্যাত কারাগার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বর্তমানে, সিদনায়া কারাগারটি একটি জাদুঘর হিসেবে রূপান্তরিত করা হচ্ছে, যাতে বিশ্বব্যাপী এই অপরাধের সাক্ষী হতে পারে।