তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার আকাশে এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন লিবিয়ার সেনাপ্রধান মোহাম্মদ আলী আহমেদ আল-হাদ্দাদ। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলের দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। লিবিয়া সরকারের ভাড়া করা একটি বিশেষ বিমানে করে রাষ্ট্রীয় সফর শেষে দেশে ফেরার পথে এই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। দুর্ঘটনায় সেনাপ্রধানের সাথে থাকা আরও চারজন উচ্চপদস্থ সামরিক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বুধবার সকালে এই খবরটি নিশ্চিত করেছে।
প্রাথমিক তদন্ত ও কন্ট্রোল টাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আঙ্কারা থেকে ত্রিপোলির উদ্দেশে রওনা হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটিতে গুরুতর বৈদ্যুতিক ত্রুটি দেখা দেয়। ফ্যালকন ফিফটি মডেলের ওই প্রাইভেট জেটটির পাইলট বিপদ বুঝতে পেরে নিকটস্থ বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের জন্য সংকেত পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু অনুমতি পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই আকাশযানটি মাঝ আকাশে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় এবং আগুনের গোলকায় পরিণত হয়ে মাটির দিকে ধাবিত হয়। আঙ্কারার মূল বিমানবন্দরের খুব কাছাকাছি এলাকায় বিমানটির ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও কাউকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তুরস্কের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানটি মাটিতে আছড়ে পড়ার আগেই বড় ধরনের বিস্ফোরণের শিকার হয়েছিল। যদিও আন্তর্জাতিক মহলে নাশকতার গুঞ্জন উঠেছিল, তবে তুরস্ক ও লিবিয়া সরকার প্রাথমিকভাবে নাশকতার কোনো আলামত পায়নি। তারা একে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত যান্ত্রিক ত্রুটি হিসেবেই দেখছে।
লিবিয়ার বর্তমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সেনাপ্রধান আল-হাদ্দাদের মৃত্যু দেশটির সামরিক বাহিনীর জন্য এক বিশাল শূন্যতা তৈরি করেছে। তুরস্কের সাথে সামরিক এবং কৌশলগত সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে এই রাষ্ট্রীয় সফরটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শোক প্রকাশ করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও লিবিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যৌথ বিবৃতি প্রদান করেছে। আগামীর দিনগুলোতে এই দুর্ঘটনার কারণ আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।



















