close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গত ১৫ বছরে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি হলো ট্রানজিট। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ট্রানজিট চুক্তিগুলো থেকে একতরফাভাবে সুবিধা পেয়েছে ভারত, আর বাংলাদেশকে অনেকাংশে বঞ্চিত হতে হয়েছে।
বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহারে ভারতের সুবিধা
ভারত বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্যে (সেভেন সিস্টার্স) পণ্য পরিবহন সহজ করেছে। কিন্তু বিপরীতে বাংলাদেশ ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহনের সুযোগ পায়নি। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, "ট্রানজিট বলতে আমরা যেটা বুঝি, সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। বরং এটি দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।"
নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে কানেকটিভিটি গড়ে তুলতে ব্যর্থ
বাংলাদেশ চেয়েছিল একটি বহুমুখী আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থা চালু করতে, যাতে নেপাল ও ভুটানও সুবিধা পায়। কিন্তু ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না পারায় সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ২০১৫ সালে ভারত নেতৃত্বে বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল) মোটর ভেহিক্যাল চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ভুটান ও নেপালের অনাগ্রহের কারণে তা কার্যকর হয়নি।
ভারতের একতরফা সুবিধা
১৯৭২ সালের চুক্তি অনুযায়ী ভারত বাংলাদেশকে নৌপথ ব্যবহারের জন্য বার্ষিক ৫ কোটি টাকা দিয়ে আসছে। তবে ২০১০ সালে নৌপথে ভারতীয় জাহাজের ওপর নির্দিষ্ট মাশুল আরোপের প্রস্তাব দিলে ভারত তা প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার সেই প্রস্তাব প্রত্যাহার করে।
২০১৬ সালে ভারত প্রথমে কলকাতা-আশুগঞ্জ নৌপথ এবং পরে আশুগঞ্জ-আখাউড়া সড়কপথ ব্যবহার করে ত্রিপুরায় পণ্য পরিবহনের সুযোগ পায়। ২০১৮ সালে "চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের চুক্তি" স্বাক্ষরিত হয়। তবে এসব চুক্তি থেকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য আর্থিক লাভ করতে পারেনি।
কীভাবে বাড়বে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি কার্যকর ট্রানজিট চুক্তি হতে হবে বহুমুখী ও আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে। দরকষাকষির মাধ্যমে ফি ও মাশুল ঠিক করা গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ আবু ইউসুফ মনে করেন, "ট্রানজিট চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। এখন পুরনো চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করে দেশের স্বার্থ রক্ষায় উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।"
উপসংহার
ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি বাংলাদেশকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ এনে দিতে পারত। তবে দুর্বল দরকষাকষির কারণে বাংলাদেশ তার স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ভবিষ্যতে বহুমুখী ট্রানজিট সিস্টেম চালু করে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এজন্য সঠিক কৌশলগত পরিকল্পনা ও উদ্যোগ প্রয়োজন।
চমকপ্রদ হেডলাইন:
👉 ট্রানজিট চুক্তিতে কেবল ভারতের জয়, বাংলাদেশ কেন বঞ্চিত?
👉 ট্রানজিটে ভারতের লাভের খেলা: বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা কোথায়?
👉 ১৫ বছরের ট্রানজিটে বাংলাদেশের ক্ষতি: চুক্তিগুলো পুনঃমূল্যায়নের সময় এসেছে!
कोई टिप्पणी नहीं मिली