close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ট্রাম্পের সিদ্ধান্তেই থেমে গেল ইসরায়েলের ইরান হামলার পরিকল্পনা!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল, কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'না' বলায় সেই অভিযান থেমে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা না পাওয়ায় বাতিল হয় পুরো অপারেশন। সামনে রোমে ইরান-যু..

ট্রাম্পের এক সিদ্ধান্তেই ধাক্কা খেল ইসরায়েলের ইরান আক্রমণ পরিকল্পনা
বিশেষ প্রতিবেদন | আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিশ্ব রাজনীতির উত্তাল মঞ্চে আবারো আলোচনায় উঠে এসেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কৌশলী এক সিদ্ধান্ত। নিউইয়র্ক টাইমস এবং আলজাজিরার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাসে ইসরায়েল একটি গোপন পরিকল্পনার মাধ্যমে ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট—ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে অন্তত এক বছর পেছনে ঠেলে দেওয়া। কিন্তু সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছিল যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার ওপর।

ইসরায়েল বিশ্বাস করেছিল, এই ধরনের উচ্চমাত্রার অভিযান পরিচালনায় যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত, গোয়েন্দা এবং সামরিক সহায়তা প্রদান করবে। তবে হোয়াইট হাউস থেকে সাড়া এলো সম্পূর্ণ উল্টো। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি এই অভিযানের অনুমোদন দিতে প্রস্তুত নন।

কূটনৈতিক উত্তেজনার বদলে আলোচনার পথে হেঁটেছে ট্রাম্প প্রশাসন

ট্রাম্প প্রশাসন সেই মুহূর্তে ইরানের সঙ্গে একটি নতুন পরমাণু চুক্তির আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। তাদের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি ছিল—পরিস্থিতিকে সামরিক উত্তেজনার দিকে ঠেলে না দিয়ে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানো। তাই তারা ইসরায়েলের হামলার প্রস্তাবে 'না' বলে দেয় এবং এর ফলে ইসরায়েলের অপারেশন থেমে যায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে। কারণ ইরানের মতো একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক অভিযান চালানো মানেই আরও বড় যুদ্ধের সম্ভাবনা। ইসরায়েল তার নিজস্ব সামরিক সক্ষমতা থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া এত বড় মিশন চালানো কার্যত অসম্ভব।

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনা নতুন গতি পাচ্ছে

এদিকে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান পারমাণবিক আলোচনা আগামী সপ্তাহে রোমে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগের রাউন্ড হয়েছিল ওমানে, যা ছিল গোপনীয় এবং খুবই উচ্চপর্যায়ের আলোচনার অংশ। রোমের আলোচনায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কতটা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে, এবং যুক্তরাষ্ট্র সেই বিনিময়ে কী ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে—এইসব বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

এই আলোচনাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে বাড়ছে আগ্রহ। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, যদি রোম বৈঠক সফল হয়, তাহলে নতুন এক মার্কিন-ইরান সম্পর্কের দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে ইসরায়েল আবারও চাপে পড়ে যাবে, কারণ তারা বরাবরই ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে হুমকি হিসেবে দেখে এসেছে।

ট্রাম্পের ‘না’—এক নতুন কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীক?

অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ছিল এক প্রকার ‘ব্রেক’ চাপা—যা না হলে হয়তো মধ্যপ্রাচ্য নতুন করে রক্তাক্ত হত। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ছিল, এই ইস্যুতে তার অবস্থানকে অনেকেই কূটনৈতিকভাবে পরিপক্ব মনে করছেন।

বিশ্লেষক জনাথন স্মিথ বলেন, “ইরানের উপর হামলার মাধ্যমে বিশ্ব রাজনীতিতে আগুন লাগানোর বদলে ট্রাম্প আলোচনা এবং চাপের কৌশলকেই বেছে নিয়েছিলেন—এটা নিঃসন্দেহে এক সাহসী কূটনৈতিক অবস্থান।”


ইসরায়েলের পরিকল্পিত ইরান হামলা ট্রাম্প প্রশাসনের অনাপত্তি না পাওয়ায় বাস্তবায়িত হয়নি। এর ফলে বড় ধরনের সংঘাত এড়ানো গেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখন নজর রোমে অনুষ্ঠিতব্য যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু আলোচনার দিকে, যা মধ্যপ্রাচ্য তথা বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মোড় আনতে পারে।

Walang nakitang komento


News Card Generator