close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

তিস্তায় হাজার ফুট নিচে পর্যটকবাহী গাড়ি, নিহত ১, নিখোঁজ ৮

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সিকিমের দুর্গম চুংথাং-মুনশিতাং সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনা! নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১ হাজার ফুট নিচে তিস্তা নদীতে পড়ে যায় পর্যটকবাহী গাড়ি। চালক নিহত, গুরুতর আহত ২ জন, নিখোঁজ ৮ জনের সন্ধানে সেনাবাহিনী ও আইটিবিপির অভি..

উত্তর সিকিমের দুর্গম পাহাড়ি পথ চুংথাং-মুনশিতাং সড়কে ঘটেছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যার পর একটি পর্যটকবাহী গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ১ হাজার ফুট গভীর খাদে পড়ে তিস্তা নদীতে তলিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে আরও দুইজনকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৮ জন পর্যটক।

পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গাড়িটি গুরুদুম্বার লেক থেকে পর্যটকদের নিয়ে চুংথাংয়ের দিকে নামছিল। চূড়ান্ত পাহাড়ি বাঁক ও পিচ্ছিল রাস্তায় চালক হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন, ফলে গাড়িটি সোজা গিয়ে পড়ে নদীর ভয়ংকর প্রবাহের মধ্যে। নদীর গভীরতা এবং চারপাশের পাথুরে গঠন এতটাই জটিল যে উদ্ধারকাজে তৎক্ষণাৎ সমস্যা শুরু হয়।

গাড়িটিতে চালকসহ মোট ১১ জন ছিলেন। নিহত ব্যক্তির পরিচয় মিলেছে গাড়িচালক হিসেবে। গুরুতর আহত দু’জনকে তাৎক্ষণিকভাবে চুংথাংয়ের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনী ও সীমান্ত পুলিশ:
নিখোঁজদের খুঁজে পেতে যৌথ উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী, ইন্দো-তিব্বতীয় সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি), সিকিম পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা এই অভিযানে অংশ নিয়েছে। সন্ধ্যা নামার পরপরই এলাকাটি ঘন কুয়াশা ও বৃষ্টির কারণে আরও দুর্গম হয়ে ওঠে। নদীর জলস্তর বৃদ্ধি এবং তীব্র স্রোতও উদ্ধার কাজকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।

জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা সোনাম ডেচু ভুটিয়া জানিয়েছেন, “তিস্তা নদীর ধারে দুর্ঘটনাস্থলটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেহেতু নদীর গতিপ্রকৃতি খুবই বিপজ্জনক এবং জায়গাটি অনেকটা নিচে, তাই রাতের বেলায় উদ্ধার কাজ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তবে সকালের আলো পাওয়ার সাথে সাথে আমরা আবার পুরোদমে অভিযান শুরু করবো।”

দুর্ঘটনার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়:
এখন পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, রাস্তায় ভারি বৃষ্টি ও পিচ্ছিল অবস্থা দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। তবে গাড়িটির ব্রেকফেইলিও সম্ভাব্য একটি কারণ হিসেবে তদন্তে বিবেচনা করা হচ্ছে। স্থানীয় মানুষ বলছেন, এই পাহাড়ি সড়কটি বর্ষায় অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, এবং পর্যটকদের চলাচলের সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন।

নিখোঁজদের পরিবারের অপেক্ষা:
এই ঘটনার পর নিখোঁজদের পরিবারের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও অন্যান্য রাজ্য থেকে পরিবারগুলো সিকিমের পথে রওনা দিয়েছেন। প্রশাসন তাদের নিয়মিত আপডেট দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত:
নিখোঁজ ৮ জনের মধ্যে কারও সন্ধান পাওয়া যায়নি। উদ্ধার অভিযান রাতের মধ্যেও সীমিত আকারে চালু থাকবে, তবে পুরো মাত্রায় তা আবার সকালের দিকে শুরু করা হবে।



এই দুর্ঘটনা শুধু একটি মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি নয়, বরং পাহাড়ি পর্যটন এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকলে কী ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তারই বাস্তব উদাহরণ। প্রশাসন ও পর্যটন দপ্তরকে এখনই এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।

لم يتم العثور على تعليقات